খেত ভরেছে করলায়। কিন্তু চাষির মুখে হাসি নেই। কারণ, দাম মিলছে না!
জামবনি ব্লকে এ বছর ব্যাপক হারে করলা ফলনের জেরে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। গত বছর মহাজনেরা মরসুমের শুরুতে তাঁদের থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে করলা কেনা শুরু করেছিলেন। কিন্তু শেষ দিকে দাম নেমে গিয়েছিল ১২ টাকা কিলোগ্রামে। সেখানে এ বার তাঁদের মহাজনদের কাছে শুরুতে ২৫ টাকা কেজি দরে করলা বিক্রি করতে হয়েছে। আর এখন দাম এক টাকা প্রতিকেজি হলেও মহাজনেরা সে ভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বলে মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের।
ব্লক কৃষি দফতরও চাষিদের এই সমস্যার কথা মেনে নিয়েছে। রাজ্যের অন্যত্রও এ বার করলার ভাল ফলন হওয়ায় জামবনিতে মহাজনেরা আর বাড়তি আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বলে মনে করছেন কৃষি দফতরের কর্তারা।
এই ব্লকে করলা চাষ শুরু হয় কার্তিক মাসের প্রথমে। জৈষ্ঠ্য মাস পর্যন্ত জমিতে করলা থাকে। হাজার পাঁচেক চাষি করলা চাষ করেন। বিঘা প্রতি প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ করে ৭০ কুইন্ট্যাল করলা উৎপাদন সম্ভব।
কিন্তু দাম না-মেলায় সার, বীজ বা সেচের কোনও খরচই তাঁরা তুলতে পারছেন না বলে অভিযোগ চাষিদের। এলাকায় কোনও হিমঘর না থাকায় তাঁরা করলা সংরক্ষণও করতে পারছেন না। ফলে উৎপাদিত করলা নিয়ে কী করবে, সেটাই এখন চিন্তার কারণ চাষিদের।
জামবনির বেলিয়া গ্রামের হরিপদ পাল প্রায় দু’বিঘা জমিতে করলা চাষ করেছেন। তাঁর খরচ হয়েছে হাজার পঞ্চাশেক টাকা। করল বেচে এ পর্যন্ত মাত্র হাজার আটেক টাকা পেয়েছেন। হরিপদবাবুর কথায়, ‘‘মহাজনের থেকে দাম মিলছে না। চাষের খরচই উঠছে না। বিদ্যুতের বিলই বা কী ভাবে দেব!’’
বড় ঘঙ গ্রামের কৃষ্ণপ্রসাদ মাহাতোর ক্ষোভ, ‘‘গত মার্চ মাসের শিলাবৃষ্টিতে আমাদের চাষের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও ক্ষতিপূরণ পাইনি। বছর তিনেক আগেও একই কারণেতরমুজ চাষেরও প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। সেই টাকাও এখনও মেলেনি।’’
ব্লকের সহ কৃষি-অধিকর্তা আশিস মহাপাত্র অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, ‘‘চাষিদের ক্ষতির তালিকা ও পরিমাণ সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েছি। ক্ষতিপূরণের টাকা এলেই চাষিরা পেয়ে যাবেন। এ বার এলাকায় করলার ফলন প্রচুর হয়েছে। চাহিদা কম থাকার দরুণ করলার দাম কমেছে।’’ চাষিদের দাবি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও মহম্মদ আলিম আনসারিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy