ট্রাক্টর চালিয়ে জমির লঙ্কা নষ্ট করছেন চাষিরা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
কাঁচালঙ্কার দর নেই। ফলে কাঁচালঙ্কা চাষ করেও ঘোর আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন চাষিরা। পরিস্থিতি এমনই যে, জমিতে বেড়ে ওঠা লঙ্কাগাছের উপর ট্রাক্টর চালিয়ে নষ্ট করে দিচ্ছেন চাষিরা। শুক্রবার সকালে ঘাটালের মনসুকায় এই ছবি সামনে আসতেই তোলপাড় পড়েছে জেলার কৃষক মহলে। খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসনও।
ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় কাঁচালঙ্কার চাষ ভালই হয়েছে। শীতের মরসুমে ঘাটাল-দাসপুর চন্দ্রকোনায় বিক্ষিপ্ত ভাবে প্রতি বছর বাণিজ্যিক ভাবে লঙ্কার চাষ করেন স্থানীয় চাষিদের একাংশ। জানা যাচ্ছে, আলুর মতো লঙ্কাচাষেও খরচের অঙ্ক ভালই। চাষিরাই জানাচ্ছেন, বিঘা প্রতি ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ পড়ে। লঙ্কাগাছকে সুস্থ রাখতে ওষুধেও খরচ ভালই হয়। সঙ্গে লাগে নিয়মিত পরিচর্যা। ফলে প্রয়োজন হয় কৃষি শ্রমিকের। জমি থেকে লঙ্কা তুলতেও লাগে বাড়তি কৃষি শ্রমিক।
বিঘা প্রতি কাঁচালঙ্কার ফলন হয় মোটামুটি ভাবে ৫০ থেকে ৬০ কুইন্টাল। দর ভাল থাকলে, লাভ মেলে। কিন্তু এ বার কাঁচালঙ্কার দাম একেবারে তলানিতে। ফলে আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন লঙ্কা চাষিরা। পরিস্থিতি এমনই যে মাঠ ভর্তি লঙ্কার গাছ জমিতে ট্রাক্টর চালিয়ে নষ্ট করে দিচ্ছেন চাষিরা। ঘাটালের মনসুকা, বালিডাঙা প্রভৃতি এলাকার চাষিরা ট্রাক্টর চালিয়ে লঙ্কা নষ্ট করে দিচ্ছেন বলে খবর। পাশাপাশি, সেই জমিতে অন্য ফসল ফলানোর তোড়জোড়ও শুরু করেছেন তাঁরা। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের দাবি, সরকার যেন ফসলের ন্যায্য দাম পাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তাঁরা জানাচ্ছেন— ‘পিএম কিসান’ এবং ‘কৃষক বন্ধু’ মিলিয়ে বছরে ১২ হাজার টাকা না দিলেও চলবে। ফসলের উপযুক্ত দাম পেলে হাসি ফুটবে তাঁদের মুখে।
এলাকার চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এ বার প্রথম থেকেই লঙ্কার দাম ভাল ছিল না। রোগপোকার আক্রমণে লঙ্কাগাছ সে ভাবে বাড়েওনি। ফলে ফলনে প্রভাব পড়েছে। এখন লঙ্কার পাইকারি দর প্রতি কুইন্টাল ১৪০০ টাকা। প্রথম দিকে দাম ছিল হাজার টাকা কুইন্টাল। সব মিলিয়ে লঙ্কা চাষ করে বিঘা প্রতি হাজার হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে চাষিদের। ঘাটালের মনসুকার চাষি উৎপল মাঝি বলছিলেন, “বাজারে দাম না থাকায় অনেক চাষি জমিমুখোই হননি। গাছ থেকে লঙ্কা তোলেননি অনেকে।” এই প্রসঙ্গে ঘাটালের বিডিও সঞ্জীব দাস বলেন, “লঙ্কা চাষের জমিতে ট্রাক্টর চালিয়ে দেওয়ার কথা শুনেছি। খোঁজ খবর নিচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy