ঝুমি নদীর উপর তৈরি হবে সেতু। ঘাটালের মনসুকায় চলছে জমি পরিদর্শন। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
অনুমোদন মিলেছিল বেশ কয়েকমাস আগেই। সেতু তৈরির জন্য প্রশাসনিক তৎপরতাও চলছিল। এ বার ঘাটালের মনসুকায় ঝুমি নদীর উপর প্রস্তাবিত সেই সেতুর জন্য বরাদ্দ হল টাকা। শুরু হয়েছে টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজও।
বুধবার জেলা গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরের পদস্থ বাস্তুকারেরা মনসুকায় ওই সেতু এলাকায় পরিদর্শনে যান। এই সেতু তৈরি হলে ঘাটালের সঙ্গে হুগলির যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। জেলা পরিষদের সহকারী বাস্তুকার সুপ্রকাশ রায় বলেন, “ঝুমি নদীর উপর সেতুর টাকা বরাদ্দ হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” ঘাটালের মনসুকায় ঝুমি নদীর উপর সেতুর দাবি বহু পুরনো। নদীটি মনসুকা এলাকাকে দু’ভাগে ভাগ করেছে। কিছুটা এগোলেই অবশ্য হুগলির খানাকুল। কিন্তু এতদিন সেখানে স্থায়ী সেতু ছিল না। ফলে সমস্যায় পড়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ।
নদী পারাপারের জন্য অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো রয়েছে। বর্ষায় জলের তোড়ে সেই সাঁকো ভেসে যায়। মনসুকা লাগোয়া হুগলির খানাকুল থানা। ব্যবসা-সহ নানা কারণে হুগলি জেলার কয়েক হাজার মানুষও ঘাটালে আসেন। ঘাটাল এলাকার বাসিন্দারাও খানাকুলে যান। কৃষি নির্ভর এলাকা মনসুকা। যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় ফসল বাজারজাত করতে সমস্যায় পড়তেন কৃষকেরা। রাতে কেউ সমস্যায় পড়লে সমস্যায় পড়েন অনেকেই। বেশ কয়েক বছর ধরেই মনসুকায় সেতুর জন্য সরব হন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই সেতু তৈরির জন্য উদ্যোগী হয় প্রশাসন। সমস্যার কথা বুঝে ঘাটালের সাংসদ দেব তৎপর হন।
সম্প্রতি ঘাটালের এক অনুষ্ঠানে এসে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বিধায়ক শঙ্কর দোলইকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় পরিদর্শন করেন। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন মন্ত্রী। দ্রুত সেতুর জন্য টাকা বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। অবশেষে দীর্ঘদিনের সেই দাবি পূরণ হওয়ায় খুশি ভুক্তভোগী-সহ সংশ্লিষ্ট সকলেই। একই সঙ্গে অবশ্য গ্রামবাসীরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই সেতুর তৈরি হলে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সঙ্গে রাজা রামমোহন রায়ের জন্মস্থানের সঙ্গে সরাসরি যোগযোগ বাড়বে। আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।
মনসুকায় এই সেতুর জন্য ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত দফতর টাকা বরাদ্দ করেছে। সেতুটি লম্বায় ১২৮ মিটার হবে। চওড়ায় সাড়ে সাত মিটার। ভবিষ্যতে ভারী যানবাহন চলাচল করার কথা মাথায় রেখেই সেতুটি তৈরি হবে। বুধবার সেতু এলাকায় পরিদর্শন করেন পঞ্চায়েত দফতরের নিবার্হী তমাল চৌধুরী-সহ পদস্থ বাস্তুকারেরা। ছিলেন এলাকার বিধায়ক শঙ্কর দোলই, ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মাঝি-সহ অন্য জনপ্রতিনিধিরা। শঙ্কর দোলইয়ের কথায়, “নদীর দুই পাড়েই বাস চলাচল করছে। তবে দু’দিকে আরও কয়েক কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy