নিকাশি নালায় জমে রয়েছে প্লাস্টিকের প্যাকেট।
ছবি এক: শহরের নালা বদ্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন। বর্ষায় সমস্যা হয়েছে। সেই সমস্যা সমাধানে নালা পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখা গেল নালা বুজেছে আবর্জনায়। যার অধিকাংশই প্লাস্টিক।
ছবি দুই: কয়েক মাস আগে শহরে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। দিন কতক বন্ধও ছিল প্লাস্টিকের ব্যবহার। কিন্তু এখন হাটে-বাজারে, দোকানে সেই প্লাস্টিকেরই রমরমা।
পর্যটন শহর ঝাড়গ্রামে পলিব্যাগ, প্লাস্টিক ব্যাগ ও থার্মোকলের সরঞ্জাম ব্যবহার রমরমিয়ে চলছে। পুরসভার নজরদারির অভাবে পুরবাসীর একাংশ প্রতিদিন পলিথিন ব্যাগে ভরে নর্দমায় জঞ্জাল ফেলছেন। শহর ভরে উঠছে পলিথিন ব্যাগে। স্থানীয়দের অভিযোগ এমনটাই।
পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে ৬ হাজার লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকান রয়েছে। এর মধ্যে মাছ, মাংস, কাঁচা আনাজ, চাল-ডাল-মশলাপাতি, মনোহারি জিনিসপত্রের প্রায় ২ হাজার দোকানে প্রতিদিন ক্রেতাদের পলিব্যাগে জিনিসপত্র দেওয়া হয়। ফলে, প্রতিদিন ওই সব দোকানগুলি থেকে যে পরিমাণ পলিব্যাগ অরণ্যশহরে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তা রীতিমতো উদ্বেগের বিষয় বলেই মনে করছেন পরিবেশবিদরা। অরণ্যশহরে পলিথিন ব্যাগের যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ঝাড়গ্রাম পুরসভা সক্রিয় না হলে আগামী দিনে অরণ্যশহরের পুরো নিকাশি ব্যবস্থাটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন খোদ পুরকর্মীদের একাংশ।
পুরসভা সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রাম শহরের ৮ টি পাইকারি দোকান থেকে প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যাগ এবং থার্মোকলের নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র বিক্রি করা হয়। পাইকারি দোকানগুলি থেকে পলিব্যাগ কেনে অন্য দোকানগুলি। চলতি বছরের গোড়ায় পুরসভার জনস্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ওই ৮টি পাইকারি দোকানকে চিহ্নিত করে মালিকদের নোটিশ দেওয়া হয়। পরিবর্তে বড় কাগজের ব্যাগ, পাটের ব্যাগ শালপাতার থালা-বাটি বিক্রির পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। মাস পাঁচেক আগে অভিযান চালিয়ে শহরের ৪০টি দোকানকে জরিমানা করে পুরসভা। পলিথিন ব্যাগ ও থার্মোকলের বাসন বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধ করা না হলে কড়া আইনি পদক্ষেপ ও সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। কিন্তু হুঁশিয়ারিই সার। অভিযোগ, পুরসভার নজরদারির অভাবে পলিব্যাগ-সহ দুষণকারক সরঞ্জামের যথেচ্ছ ব্যবহার বেড়েই চলেছে।
ডাস্টবিন উপচে আবর্জনা ছড়িয়ে রয়েছে রাস্তায়।
শহরের এক দোকানদারের বক্তব্য, “মাস পাঁচেক আগে পুরসভা নিষেধ করায় পলিব্যাগে জিনিসপত্র দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিছুদিন কাগজের ঠোঙায় জিনিসপত্র দিচ্ছিলাম। কিন্তু পুরসভার নজরদারি না থাকায় বেশির ভাগ দোকানগুলি নিয়ম মানছে না। তাই আমিও এখন পলিব্যাগে জিনিসপত্র দিচ্ছি।”
ঝাড়গ্রামের প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য প্রদীপ সরকার বলেন, “পুরসভা কড়া পদক্ষেপ করছে না। তাই পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার বাড়ছে।”
শহরের উপ পুরপ্রধান শিউলি সিংহ বলেন, “খুব তাড়াতাড়ি আমরা ফের অভিযানে নামব। এ বার জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি, ওই সব সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হবে।” শিউলিদেবী জানান, আগামী দিনে পড়ুয়াদের নিয়ে শহরে সচেতনতা র্যালি করা হবে। সেইসঙ্গে কাগজের ঠোঙা, সহজলভ্য কাঁচা ও শুকনো শালপাতার ব্যবহারের স্বপক্ষে প্রচার ও জনমত গঠনেরও কাজ চালাবেন পুর-কর্তৃপক্ষ।
দেবরাজ ঘোষের তোলা ছবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy