রেললাইনের ধারে মিলল খড়্গপুর আইআইটি-র এক ছাত্রের ছিন্নভিন্ন দেহ। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আইআইটি সংলগ্ন টুরিপাড়ায় রেললাইনের ধারে মেলে সানা শ্রীরাজ (২০) নামে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রের দেহ। তাঁর বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলামের তেক্কালি এলাকায়। ওই ছাত্র আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই প্রাথমিক তদন্তে মনে করছে রেল পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। খড়্গপুরে রেল পুলিশের সুপার অমিত সিংহ বলেন, “ময়নাতদন্তের পরেই স্পষ্ট হবে এটা আত্মহত্যা না দুর্ঘটনা। সব দিকই খতিয়ে দেখছি।”
প্রযুক্তি বিদ্যার পীঠস্থান খড়্গপুর আইআইটিতে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। পড়াশুনোর চাপ, চাকরি পাওয়া নিয়ে উদ্বেগ, পরিবার থেকে দূরে থাকার মতো বিষয়গুলি এর জন্য দায়ী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত ১৬ জানুয়ারি জকপুর স্টেশনের কাছে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র লোকেশ মিনার। তদন্তে উঠে এসেছিল আত্মহত্যার কথা। জানা গিয়েছিল, ফুসফুসের সমস্যায় ভুগতে থাকা লোকেশের অবসাদ ছিল। ২০১৪-র মার্চে আইআইটির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডুয়াল ডিগ্রি কোর্সের ছাত্র লোকেশকুমার গোয়েলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পরেও মিলেছিল ‘সুইসাইড নোট’। ওই বছরই ১৭ মার্চ মদনমোহন মালব্য হল থেকে উদ্ধার হয়েছিল বোগা শ্রবণ নামে এক এমটেক পড়ুয়ার দেহ। সেই ঘটনাতেও আশানুরূপ চাকরি না পাওয়া জনিত অবসাদ ও তার ফলে আত্মহত্যার তত্ত্ব উঠে এসেছিল।
সেই তালিকায় এ বার জুড়ল সানা শ্রীরাজের নাম। রেললাইনে পড়ে থাকা ছিন্নভিন্ন দেহের পাশে রেল পুলিশ ওই ছাত্রের পরিচয়পত্র পায়। তারপরই খবর দেওয়া হয় আইআইটি কর্তৃপক্ষ ও ওই ছাত্রের বাড়িতে। শ্রীকাকুলাম থেকে এ দিন দুপুরে খড়্গপুরে এসে পৌঁছন মৃতের বাবা ভেঙ্কট রমানা। কিন্তু ছেলে কেন আত্মহত্যা করল, তার কোনও ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি। আইআইটির লালা লাজপত রাই হলে থাকতেন সানা। সেখানকার অন্য ছাত্রদের কাছেও স্পষ্ট নয় সানার আত্মহত্যার কারণ। সানার পাশের ঘরে থাকা মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সুশান্ত কুমার বলছিলেন, “ও শান্ত স্বভাবের ছিল। পড়াশোনাতেও ভালই ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে শেষ দেখা হয়েছিল। তখনও কিছু বুঝিনি।” ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান সিদ্ধার্থ সেনেরও বক্তব্য, “সানা শ্রীরাজ পড়াশুনোয় মন্দ ছিল না। কী কারণে ও আত্মহত্যা করল বুঝতে পারছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy