প্রতীকী ছবি।
করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এক কর্মীকে সাসপেন্ড করল রেল।
খড়্গপুর ডিভিশনের নিমপুরা রেল ইয়ার্ডের টেকনিশিয়ান শুভেন্দু সামন্ত নামে ওই ব্যক্তিকে রবিবার রাতেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। লকডাউন পর্বে ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগে ধরপাকড় চলছেই। সমাজমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে কলকাতার এক তরুণী, বেঙ্গালুরুর এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন। গুজব ছড়ানোর অভিযোগে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির এক যুবককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারপরে সামনে এল রেলকর্মী সাসপেন্ডের ঘটনা।
খড়্গপুর রেল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধুরী জানান, ওই রেলকর্মীর প্রেসক্রিপশন ব্যবহার করে করোনা আক্রান্তের এই গুজব ছড়ানো হয়েছে। তার প্রেসক্রিপশনের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। ওই রেলকর্মী যেহেতু নিজের প্রেসক্রিপশন নিজেই প্রকাশ্যে এনেছেন তাই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিও হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘কেউ যাতে করোনা নিয়ে কোনও ভুয়ো তথ্য সমাজ মাধ্যমে না দেয় সেই বার্তাও আমরা দিচ্ছি।” শো-কজ় না করে সরাসরি সাসপেন্ড করা হল কেন? ওই আধিকারিকের ব্যাখা, এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। তাই সাসপেন্ড করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
সাসপেন্ড হওয়া রেলকর্মী শুভেন্দু পূর্ব মেদিনীপুরের ভোগপুরের বাসিন্দা। তিনি গত ২১ মার্চ পর্যন্ত ট্রেনে পাঁশকুড়া থেকে খড়্গপুরের কর্মস্থলে যাতায়াত করেছেন। তারপর লকডাউন হয়ে যাওয়ায় অফিসে আসতে পারেননি। গত ২৮ মার্চ রেলকর্মীদের বিশেষ ট্রেনে তিনি খড়্গপুরে আসেন। তিনি জানান, ওই দিন তিনি খড়্গপুর রেল হাসপাতাল থেকে ফিট সার্টিফিকেট গিয়েছিলেন। চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করেন জানান যে তাঁর শরীরে করোনা সংক্রমণ নেই। তবে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে তাঁকে ১৪ দিন কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে।
তাঁর দাবি, “চিকিৎসক আমাকে কোয়ারেন্টিন থাকতে বলায় অফিসের গ্রুপে সেটি পোস্ট করেছিলাম। কেউ সেটির ভুল ব্যাখ্যা করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে। আমি নিজে এমন পোস্ট করিনি।”
ফেসবুক ও হোয়াটস্অ্যাপে শুভেন্দুর নামে লেখা যে প্রেসক্রিপশন ভাইরাল হয়েছে তাতে ‘কোভিড-১৯’ শব্দটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অনেকেই পুরো প্রেসক্রিপশন না পড়ে শুধু ওই শব্দটিকে দেখেই সেটিকে ফের শেয়ার করেছেন। এই নিয়ে সরব হয়েছে রেলের মেনস ইউনিয়ন। সংগঠনের নিমপুরা রেল ইয়ার্ডের নেতা প্রণব রায় বলেন, “ওই রেলকর্মী যে এই ভুয়ো তথ্য পোস্ট করেছিলেন তার কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। তাঁকে সাসপেন্ডের আগে সতর্ক করা উচিত ছিল। ওই রেলকর্মীর সঙ্গে কথা বলব।’’ ওই রেলকর্মী যেহেতু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন, তখন চিকিৎসক কেন অকারণে ‘কোভিড-১৯’ শব্দটি লিখলেন সেটি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে খড়্গপুর রেল হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল সুপারিন্টেনডেন্ট এসএ নাজমির বক্তব্য, ওই কর্মী করোনা আক্রান্ত নন ও তাঁর বাইরে যাওয়ার ইতিহাস নেই সেটা লিখতে গিয়েই ‘কোভিড-১৯’ শব্দটির উল্লেখ করা হয়েছে। সেটার ভুল ব্যাখ্যা করা ঠিক নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy