সংগঠনের নামে রসিদ।
বিশ্বকর্মা পুজোর চাঁদা আদায় করাতে গিয়ে শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠণ আইএনটিটিইউসির বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়ার ঘটনা। আহত শ্রমিকদের মধ্যে তিনজনকে তমলুকের একটি নার্সিংহোমে ভরতি করা হয়েছে। বাকিরা নন্দীগ্রাম ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও বিভিন্ন নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন।
অভিযোগ চাঁদা চেয়ে অন্ততপক্ষে ১৩জন মাছ ধরার শ্রমিক ও লরির চালককে মারধর করেছেন সংগঠনের সদস্যরা। উঠেছে একটি ট্রেকার ভাঙচুরের অভিযোগও। এমনকী চাঁদা আদায়কারীদের ছোড়া ইটের ঘায়ে দু’জন পুলিশকর্মীও জখম হয়েছেন।
এ দিন দু’টি লরি করে নরঘাটের জনা চল্লিশেক ভেড়ি শ্রমিক নন্দীগ্রামে কাজ করতে যাচ্ছিলেন। সে সময় নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের রেয়াপাড়াতে তাদের লরি আটকে বিশ্বকর্মা পুজোর চাঁদা চায় একদল যুবক। চাঁদা নিয়ে বচসার জেরে ওই ট্রাকের চালক ও শ্রমিকদের মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
রবিবার বিকালে এ বিষয়ে নন্দীগ্রামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত খোদামবাড়ি বড়পুল লোডিং-আনলোডিং ইউনিয়ানের নামে বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য চাঁদা আদায় করেছিল। তারাই মারধর করেছে। এ দিকে ভেড়ি শ্রমিকদের মারধরের খবর পেয়ে রবিবার বিকালে নন্দীগ্রামের বাগদা চাষিরা থানায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আইএনটিটিইউসির লোকজন চাঁদা চাইছিল। না-পেয়ে শ্রমিকদের গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করা হয়। ঘটনার প্রতিবাদে তারা শ্রমিকরা গাড়ি আড়াআড়ি ভাবে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ওই সময় ফের চাঁদা আদায়কারীরা শ্রমিকদের আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এলে পুলিশকেও ইটপাটকেল ছুড়ে তাঁরা করে ইউনিয়নের সদস্যরা।
নরঘাটের বাসিন্দা শেখ আজানুর, রঞ্জিত ভুঁইয়ারা জানান, আমরা নরঘাট থেকে দু’টি লরি করে কাজ করতে বেরিয়েছিলাম। আমাদের পিছনেই ভেড়ির ম্যানেজাররা একটি ট্রেকারে ছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ রেয়াপাড়ায় আমাদের গাড়ি আটকে বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য চাঁদা চায়। না দিতে চাইলে লরির চালককে নামিয়ে মারধর শুরু করে। এর প্রতিবাদ করলে আমাদের উপর লাঠি রড, নিয়ে আমাদের উপর চড়াও হয়।
অভিযোগ মারধরের হাত থেকে বাঁচতে কয়েকজন খালের জলে নেমে যান। খালে নেমেও তাঁদের মারধর করা হয়েছে। এরপর পিছনের ট্রেকারটিতেও ভাঙচুর চালানো হয়। জানিয়েছি।
পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া অবশ্য জানান, অভিযোগ পেলে তো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবেই।
আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত খোদামবাড়ি বড়পুল লোডিং আনলোডিং ইউনিয়ানের সম্পাদক গোপাল মাইতি অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি তুষার মণ্ডল জানান, ‘‘যদি দলের কেউ মারধর বা জুলুমবাজি করে থাকেন তবে তা সঠিক হয়নি। ঘটনার তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেবে। আমরা কখনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দিই না।’’ এ দিকে খোদামবাড়ি ১গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের পুষ্প রানি মণ্ডল-সহ মোট ১৪জনের নামে অভিযোগ হয়েছে। মারধরের পাশাপাশি ফিসারির ম্যানেজার ও শ্রমিকদের কাছ থেকে মোট ৪লক্ষ ৬৫হাজার টাকা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
নন্দীগ্রামের বাগদা চাষি রবিউল ইসলাম জানান, ‘‘এ ভাবে চাদার জুলুম চললে ব্যবসায়ী নন্দীগ্রামে আসতে চাইবে না। ফলে আমরা চরম সমস্যায় পড়ব। যারা এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy