বামেই আরাম। নিজস্ব চিত্র
কোথায় গিয়েছে পছন্দের ব্র্যান্ডের স্যান্ডল সোপ, মাইল্ড পারফিউম! পাটভাঙা বাহারি পাঞ্জাবি, কটন শার্ট আর মশমশে লেদার শু। গত দেড়মাস যে যুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে তাতে এ সব ওলটপালট হয়ে গিয়েছে মানস ভুঁইয়ার।
এখন গাড়ির ড্যাশবোর্ডে গড়াচ্ছে মাথাব্যথার ‘লিকুইড বাম’। কিছুক্ষণ পরপর গাড়ির কাছে এসে সেটাই ঘষে নিচ্ছেন ডাক্তারবাবু। চড়া রোদে ঘুরে ঘুরে এই মাথাব্যথা এখন নিত্যসঙ্গী নির্বাচনী রাজনীতিতে পোড়খাওয়া মানুষটি। এই যুদ্ধ তাঁর অচেনা নয়। জয়ের মুকুটে নতুন পালকের আশায় বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে চ্যালেঞ্জ করাই কি এই ‘মাথাব্যথা’র কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মানসের? বিজেপির দখলে থাকা খড়্গপুরের মাঠে দাঁড়িয়ে কাঁধের তোয়ালে মাথায় টেনে বললেন, ‘‘সাতবার ভোটে জিতেছি। কিন্ত এ বার একটা অন্যরকম অনুভুতি হচ্ছে। আমি আমারটুকু করেছি। বাকিটা ২৩ ফল ঘোষণার দিন।’’
বাংলার নির্বাচনী রাজনীতিতে মানসই একমাত্র যিনি হাল ছেড়ে না দিয়ে ভোট নিয়ে আদালত থেকে জয় পেয়েছিলেন। বামেরা রিগিং করেছে প্রমাণ করেছে সবং কেন্দ্র থেকে প্রথমবার বিধায়ক হয়েছিলেন। আবার সেই সিপিএমকে গলায় জড়িয়ে কংগ্রেসের হয়ে ভোটে জিতেছেন ২০১৬ সালে। তাঁর কেন এইরকম বেহাল অবস্থা? মানসের কথায়, ‘‘সেই কবে থেকে ভোট করছি! কিন্তু সত্যিই এবারটা অন্যরকম। লোকসভা নির্বাচনের গুরুত্ব কিছুটা আলাদা তো।’’
কতটা অন্যরকম তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন মানসের দীর্ঘদিনের গাড়িচালক বিশু পাত্র। দাদা রোদে ঘুরলেও দাদার টয়োটা এসইউভি-র ঠান্ডায় বসে থাকার অনুমতি আছে তাঁর। বললেন, ‘‘প্রতিদিন কম করে আড়াইশো কিলোমিটার চালাচ্ছি। দাদার ক্লান্তি নেই। সিকিওরিটির দু’জন আর আমিও সঙ্গে আছি।’’ তারপরই হাসলেন, ‘‘সারাদিন বিস্কুট আর জল। রাত দেড়টায় ভারী কিছু।’’
এখন বাড়িতেও কি যত্ন নেই তেমন? মানসের কথায়, ‘‘কে করবে? তিনিও তো নির্বাচনের কাজে।’’ ঘাটালের প্রার্থীর জন্য ব্যস্ত সবংয়ের বিধায়ক তাঁর স্ত্রী গীতা। বললেন, ‘‘সকালে স্নান আর পুজো। এই দুটো সেরে বেরোচ্ছেন। ব্যস্, আর কিছু জানি না। ভোটের সময় কে, কাকে দেখে?’’
আর একটা জিনিস বদলায়নি। দিনের সঙ্গে রং মিলিয়ে জামাকাপড়। এমনকি তোয়ালেটাও। আর এখনও চেনা মুখ দেখলে কংগ্রেস ছাড়তে কতটা বাধ্য হয়েছিলেন, সে সম্পর্কে দু’চার কথা শোনান মেদিনীপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy