হামলা: ভাঙচুর করা হয়েছে তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলরের গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটের সময় গোলমাল। আর তার জেরে লালগড়ের নেতাইয়ে আক্রান্ত হলেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি। মেদিনীপুরে শাসক দলের বিদায়ী কাউন্সিলরের বাড়িতে হামলা হল।
সোমবার নেতাইয়ের লাগোয়া সয়েরসাই গ্রামে গিয়ে আক্রান্ত হলেন তৃণমূলের লালগড় ব্লক সভাপতি শ্যামল মাহাতো। অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরা এ দিন শ্যামল ও তাঁর দলবলকে মারধর করে। মারধরে মাথা ফেটে গুরুতর জখম হন ভন্তা ধীবর নামে এক তৃণমূল কর্মী। তাঁকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোট চলাকালীন নেতাই গ্রামের বুথের আশেপাশে সয়েরসাই গ্রামের কয়েকজন বিজেপি কর্মী বাইক নিয়ে ঘোরাঘুরি করছিলেন। ভন্তার নেতৃত্বে তৃণমূলের লোকজন বিজেপি কর্মীদের হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। বিজেপি কর্মীরা পালিয়ে যান। রাতে সয়েরসাই থেকে জনা পঞ্চাশ বিজেপি কর্মী নেতাই গ্রামে এসে ভন্তার বাড়িতে চড়াও হয়। ভন্তাকে না পেয়ে বিজেপি কর্মীরা হুমকি দিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এ দিন দুপুরে ব্লক সভাপতি শ্যামল মাহাতো, ভন্তা-সহ দলবল নিয়ে মোটর বাইকে করে সয়েরসাই গ্রামে যান। গ্রামে ঢুকতেই বিজেপি কর্মীরা তাঁদের ঘিরে ধরে মারধর শুরু করেন বলে অভিযোগ। ওই সময় বাঁশ দিয়ে ভন্তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভন্তাকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ঘটনার পরে নেতাই গ্রামে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার পাল্টা হিসেবে এদিন দুপুরে লালগড় বাজারের এসআইচকে বিজেপি সমর্থক দোকানদের তৃণমূলের লোকেরা মারধর করে বলে অভিযোগ। ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা বলেন, ‘‘বিজেপির লোকেরা পরিকল্পিত ভাবে এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে শ্যামল ও দলীয় কর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছে।’’ বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, ‘‘পরাজয় নিশ্চিত বুঝেই তৃণমূলই আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। এভাবে হামলা হলে আমরাও বুঝে নেব।’’
ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটেছে মেদিনীপুর শহরেও। তৃণমূলের এক বিদায়ী কাউন্সিলরের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির লোকেদের বিরুদ্ধে। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বিদায়ী কাউন্সিলরের নাম টোটন সাসপিল্লী। বাড়ি বটতলাচকের অদূরে হর্ষণদিঘিতে। রবিবার দুপুরে বটতলাচকে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির সংঘর্ষ হয়। অভিযোগ, রাতে বিজেপির কর্মীরা চড়াও হন। সেসময় অবশ্য বিদায়ী কাউন্সিলর দলীয় কার্যালয়ে ছিলেন। হামলার খবর পেয়ে তিনি বাড়িতে আসেন। তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর টোটনের কথায়, ‘‘বিজেপির কিছু ছেলে, এরমধ্যে খড়্গপুরের কিছু ছেলেও ছিল, তারা আমার বাড়িতে এসে চড়াও হয়েছে। আমার ঘরদোর ভেঙে দিয়েছে।’’ ঘটনার পরপরই দলের শহর সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডব, দলের প্রাক্তন শহর সভাপতি সুকুমার পড়্যাকে সব জানান টোটন। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকার মানুষের কাছেও জানতে চেয়েছিলাম, প্রতিবাদ করলেন না কেন। মানুষ বলেছেন, ওদের হাতে বন্দুক, তরোয়াল ছিল।’’ বিজেপি অবশ্য ঘটনার দায় নিতে নারাজ। দলের জেলা সম্পাদক অরূপ দাস বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় দলের কেউ যুক্ত নয়।’’ অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীদের খোঁজ চলছে। তদন্তে সবদিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বটতলাচকে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। চাপা উত্তেজনাও রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy