সভাস্থলে জলের ট্যাঙ্ক।
সন্ত্রাসের তালুকে সৌজন্যের রাজনীতি। গড়বেতায় সিপিএমের সভায় জল পাঠালেন তৃণমূলের নেতা।
তপ্ত মঙ্গলবারে গড়বেতায় ছিল সিপিএমের নির্বাচনী সভা। ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী দেবলীনা হেমব্রমের সমর্থনে সেই সভায় এসেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। মোদী ও মমতাকে এক সঙ্গে বিঁধে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘মোদীর হাত দিদির মাথায়, মোদীর গদি টলমল হলে দিদির গদিও টলমল করে। মোদী-মমতার সম্পর্ক কী সেটা মানুষ বুঝতে পেরেছেন।’’ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদো-কানহো-ডহর-বিরসা মুন্ডা কে, উলগুলান, অলচিকি কী— এ সব কিছুই জানেন না বলে কটাক্ষও করেছেন সূর্যকান্ত। এ দিন দেবলীনাকে পাশে নিয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার পদযাত্রা করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায়। গড়বেতা শহরে গুঞ্জন হল মাঠ থেকে মিছিল শুরু হয়। মিছিল শেষে সভাস্থলে ঘামঝরা ক্লান্ত শরীরে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের জন্য জলের ট্যাঙ্কের ব্যবস্থা হয়েছিল। জলপানে লাইন পড়ে, অনেকে বোতলে জল ভরে নেন। গলা ভেজাতে ব্যস্ত কর্মীরা তখনও জানেন না এই জলের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা। সভাশেষে সভার সভাপতি সিপিএম নেতা তথা এ বারের লোকসভা নির্বাচনে গড়বেতা বিধানসভা কেন্দ্রে দলের নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক তপন ঘোষ সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে সেই তৃণমূল নেতার কথা উল্লেখ করলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
এ দিনের মিছিল ও সভায় জলের সংস্থান করতে সোমবারই গড়বেতা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শ্যামল বাজপেয়ীকে অনুরোধ করেন স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। শ্যামল বাজপেয়ী তৃণমূলের গড়বেতা ১ ব্লক কোর কমিটির সদস্য ও গড়বেতা অঞ্চল নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক। সিপিএম নেতাদের অনুরোধ মেনে মঙ্গলবার শ্যামল স্থানীয় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে বলে পানীয় জলের একটি ট্যাঙ্ক সভাস্থলে আনিয়ে দেন। এ দিন সভাশেষে সিপিএম নেতা তপন ঘোষকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সভায় আমাদের পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই গড়বেতা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শ্যামল বাজপেয়ীকে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শ্যামল বলছেন, ‘‘এটা মানবিকতা।’’ একই সঙ্গে তৃণমূল প্রধানের খোঁচা, ‘‘২০০৯ সালে এই গড়বেতায় শুভেন্দু অধিকারীর সভার জন্য এই সিপিএম আমাদের জল দেয়নি।’’ সেই অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি সিপিএম নেতৃত্ব। বিজেপি যদিও গোটা ঘটনার অন্য ব্যাখ্যা দিচ্ছে। তাদের মতে, সিপিএমকে শক্তি জুগিয়ে কার্যত গেরুয়া শিবিরকে রুখতে চাইছে তৃণমূল। বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শমিত দাসের কথায়, ‘‘সিপিএমকে তৃণমূল অক্সিজেন দিলেও কিছু হবে না। তৃণমূলের গণতন্ত্র হত্যার বিরুদ্ধে মানুষ একজোট হয়েছেন।’’
তবে সৌজন্যের তাল কেটেছে এ দিনও। গড়বেতার সভায় যোগ দেওয়ার জন্য রাইখা এলাকায় ৩ জন সিপিএম সমর্থককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কেউ জড়িত নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy