Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Death

বিয়ে নিয়ে কথা কাটাকাটি, লুকিয়ে দিঘা বেড়াতে এসে হোটেলের ঘরে আত্মঘাতী যুবক! আটক প্রেমিকা

প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গিয়েছে, ওই তরুণী মৃতের দূর সম্পর্কের আত্মীয়া। দু’জনের মধ্যে বেশ কিছু প্রণয়ের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, বিয়ে করা নিয়ে দু’জনের মধ্যে কোনও সমস্যা চলছিল।

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
দিঘা শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৩০
Share: Save:

কাজের জন্য বন্ধুর সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে যাওয়ার কথা বলে গত মঙ্গলবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানার মণ্ডলপুর এলাকার বাসিন্দা অরবিন্দ কোনার। তবে এসেছিলেন দিঘায়। প্রেমিকাকে নিয়ে উঠেছিলেনওল্ড দিঘার একটি হোটেলে। অভিযোগ, সেই প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়া করে হোটেলের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন ওই যুবক। পুলিশ প্রশাসনের তরফে অরবিন্দের মৃত্যুর খবর পেয়ে দিঘায় ছুটে এসেছেন পরিবারে সদস্যরা। ইতিমধ্যে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। সেই সঙ্গে হোটেলে যে তরুণীর সঙ্গে উঠেছিলেন, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার ওল্ড দিঘার একটি হোটেলে এক তরুণীকে নিয়ে ওঠেন অরবিন্দ। প্রেমিকার পরিচয় দিয়েছিলেন স্ত্রী বলে। গত কয়েক দিন সমুদ্র সৈকতে ঘুরেবেড়িয়ে ভালই কাটে তাঁদের। কিন্তু সমস্যার সূত্রপাত শনিবার বিকেল নাগাদ। জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, হোটেলের ঘরে দু’জনের মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। বিবাদের পর ওই তরুণী রেগে গিয়ে হোটেলের ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় চলে যান। ওই সময়েই হোটেলের ঘরে গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন অরবিন্দ। ঘরে ঢুকে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই তরুণী। তাঁর চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘটনার কথা জানাজানি হতেই হোটেলের তরফে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। তার পর পুলিশ দেহ উদ্ধার করেছে। তার পরেই অরবিন্দের সঙ্গে হোটেলের ঘরে থাকা ওই তরুণীকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। খবর পেয়ে দুই পরিবারের লোকজন দিঘায় আসেন। রবিবার ওই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এসেছে।

মৃতের বাবা আনন্দ কোনার বলেন, “গত মঙ্গলবার ছেলে ওর এক বন্ধুর কাছে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়ে আসে। আমরা জানতাম, ও উত্তরপ্রদেশে গিয়েছে। সেখানে আইটিআই পড়বে বলেছিল। কিন্তু শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টে নাগাদ দিঘা মোহনা থানা থেকে আমাদের ফোন করে জানানো হয় যে, আমার ছেলে হোটেলে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে!’’ একটু থেমে তিনি বলেন, ‘‘দিঘায় এসে দেখলাম মেয়েটিকে থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছে। কী ভাবে এমনটা ঘটল আমরা কিছুই জানি না।’’ তিনি জানান, ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।

অন্য দিকে, অরবিন্দের সঙ্গে যে তরুণী হোটেলে এসেছিলেন তাঁর বাবা বলেন, “বীরভূমের নতুনগ্রামে আমাদের বাড়ি। মেয়ে লাভপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে। দার্জিলিংয়ে এনসিসি ক্যাম্পে যাচ্ছে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল মেয়ে। শনিবার পুলিশের ফোন থেকে জানতে পারি, একটি ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ে দিঘায় এসেছিল। সেই যুবক আত্মঘাতী হয়েছে বলে জেনেছি। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, আমরা বিশদে কিছুই জানতে পারিনি।’’ পুলিশের একটি সূত্রে খবর, দেহটি রবিবার ময়না তদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গিয়েছে, ওই তরুণী মৃতের দূর সম্পর্কের আত্মীয়া। দু’জনের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই প্রণয়ের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, বিয়ে করা নিয়ে দু’জনের মধ্যে কোনও সমস্যা চলছিল। তাই নিয়েই হোটেলের ঘরে দু’জনের মধ্যে বিবাদ হয়। শনিবার কথা কাটাকাটির পর তরুণী হোটেলের বারান্দায় বসে থাকার সময় যুবক ঘরের ভিতর আত্মঘাতী হয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death old digha Hotel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE