কুড়মি সংগঠনের হলুদ পতাকা লাগানো হয়েছে ঝাড়গ্রাম শহরের বিবেকানন্দ মোড়েও। নিজস্ব চিত্র
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলা-কাণ্ডের জেরে কুড়মি আন্দোলনের ১০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতিবাদে ৬ জুন শহরে কুড়মিদের ‘মাহা হান্তা জুড়আহি’-র (বিশাল প্রতিবাদ জমায়েত) ডাক দিয়েছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। এই পরিস্থিতিতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সতর্ক জেলার পুলিশ মহলে। ওই দিন ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশের পাশাপাশি, জেলা এবং অন্যান্য জেলার প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
২৬ মে জেলায় অভিষেকের কর্মসূচির জন্য অন্যান্য জেলা থেকে প্রচুর পুলিশ আনা হয়েছিল। ওই পুলিশ কর্মীদের একাংশ এখনও নিজের জেলায় ফিরে যাননি। শহরের একটি স্কুলে পুলিশকর্মীরা এখনও রয়েছেন। সূত্রের খবর, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আগাম আঁচ করেই বাড়তি পুলিশ জেলায় রেখে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আদিবাসী কুড়মি সমাজ ‘মাহা হান্তা জুড়আহি’ কর্মসূচি ঘোষণা করে দেওয়ায় অস্বস্তি শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরেও। যদিও কনভয় কাণ্ডে ধৃতদের মধ্যে আদিবাসী কুড়মি সমাজের কেউ নেই। মূলত গ্রেফতার হয়েছেন ঘাঘর ঘেরা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতা-কর্মীরা। আদিবাসী কুড়মি সমাজ গত এপ্রিলে শুরু হওয়া ঘাঘর ঘেরা আন্দোলনে যোগ দেয়নি। সংগঠনটি পৃথক ভাবে দাবি আদায়ের আন্দোলন করছিল। কিন্তু রাজেশ, শিবাজী মাহাতো সহ ঘাঘর ঘেরা আন্দোলনের কুড়মি নেতা-কর্মীরা গ্রেফতার হতেই ‘মাহা হান্তা জুড়আহি’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। সংগঠনের মূল মানতা (মুখ্য উপদেষ্টা) অজিতপ্রসাদ মাহাতো জানিয়েছেন, ৬ জুন প্রতিবাদ জানাতে জঙ্গলমহলের সমস্ত কুড়মি গ্রাম থেকে মানুষজন অরণ্যশহরে আসবেন। জমায়েত করে দেখিয়ে দেওয়া হবে কুড়মি শক্তি। তবে অজিতের দাবি, প্রতিবাদ হবে শান্তিপূর্ণ।
কুড়মি আন্দোলনের কর্মীরা বলছেন, সর্বস্তরে প্রতিবাদ জানাতে কুড়মি সম্প্রদায়ের আবালবৃদ্ধবনিতা সেদিন শহরে জমায়েতে যোগ দেবেন। অজিতপ্রসাদের কথায়, ‘‘কুড়মিদের উপর পুলিশি জুলুম শুরু হয়েছে। এর প্রতিবাদে ২ জুন জঙ্গলমহলের সমস্ত থানায় বিক্ষোভ ডেপুটেশন হবে। ৩ জুন চার জেলার এসপিকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। আর ৬ জুন কুড়মিরা জমায়েত করে বুঝিয়ে দেবেন তাঁদের শক্তি।’’ এদিকে অ-আদিবাসীদের জনজাতি তালিকাভুক্ত করা চলবে না এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে ৮ জুন ১৪টি আদিবাসী সংগঠন একযোগে ২৪ ঘন্টা বাংলা বন্ধের ডাক দিয়েছে। বনধের আওতায় থাকছে রেলও। আদিবাসীরা বনধ ঘোষণা করতেই পাল্টা কুড়মিরাও ৬ জুন ঝাড়গ্রাম শহরে জমায়েতের ডাক দিয়েছে। কুড়মি নেতারা বলছেন, ‘‘পুলিশ জমায়েতের অনুমতি না দিলেও প্রতিবাদ জমায়েত হবেই। এই মাটি আমাদের, সেখানে আমাদের পূর্ণ অধিকার রয়েছে।’’
আদিবাসী-কুড়মি যুযুধান দু’পক্ষ সরব হওয়ায় এখন শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখাটাই পুলিশের কাছে মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ! পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার পর্যন্ত ওই জমায়েত করার কথা মৈখিক ভাবে জানানো হয়েছে। তবে লিখিত অনুমতি নেয়নি। পুলিশ জানাচ্ছে, লিখিত অনুমতি না নিলে আইনত পদক্ষেপ করা হবে। তবে পুলিশি মোতায়নের ব্যাপারে পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলেন, ‘‘প্রয়োজন মত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy