Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Goaltore

মন্ত্রী শ্রীকান্ত এখন মাঠেঘাটে ঘুরছেন ‘মানুষের নিরাপত্তা’য়

এমনকি দলনেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁকে কার্যত ক্ষমা চাইতে হয় মেদিনীপুরের বিধায়ক অভিনেত্রী জুন মালিয়ার কাছে।

নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের রাস্তায় বাইকে ঘুরছেন মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো। নিজস্ব চিত্র

নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের রাস্তায় বাইকে ঘুরছেন মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:১৯
Share: Save:

বেফাঁস মন্তব্যের জেরে কম ঝড় পোহাতে হয়নি রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোকে। নিরাপত্তারক্ষী তুলে নেওয়া থেকে, মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়ার কাছে ক্ষমা চাওয়া, এমনকি দলের অন্দরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল শালবনির বিধায়ককে। সেই ঘটনার পর চার মাস কেটে গিয়েছে। কোনওরকম নিরাপত্তা বলয় ছাড়াই জঙ্গলমহলে ঘুরছেন মন্ত্রী শ্রীকান্ত। নেই লাল বা নীল বাতির গাড়ি, কিংবা পাইলট কার। মন্ত্রী হিসাবে ২ জন দেহরক্ষী পেতেন তিনি, তুলে নেওয়া হয়েছে সেগুলিও। শ্রীকান্ত বলছেন, ‘‘কী দরকার সিকিয়োরিটি! মানুষই আমার নিরাপত্তা দিচ্ছেন।’’ মন্ত্রীর কথায় অভিমানের সুর।

রাজ্য সরকারের এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী হওয়া সত্বেও, পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াই তাঁর জঙ্গলমহলে ঘোরাঘুরিতে দলের অন্দরেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে। প্রকাশ্যে অবশ্য কেউ মুখ খুলছেন না। তবে চর্চা হচ্ছে মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহলে। শালবনির তিনবারের বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো এ বারই প্রথম রাজ্য মন্ত্রিসভায় স্থান পান। আগে ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। দফতর বদলে শ্রীকান্ত এখন ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী। গত অগস্ট মাসে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় তাঁর একটি বেফাঁস মন্তব্যে জলঘোলা হয় তৃণমূলের অন্দরে। দলের চলচ্চিত্র অভিনেতা - অভিনেত্রী সাংসদ - বিধায়কদের সম্পর্কে তাঁর মন্তব্যে ঝড় ওঠে রাজনৈতিক মহলে। অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় শ্রীকান্তকে। এমনকি দলনেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁকে কার্যত ক্ষমা চাইতে হয় মেদিনীপুরের বিধায়ক অভিনেত্রী জুন মালিয়ার কাছে। বেফাঁস মন্তব্যের জেরে নিরাপত্তারক্ষী তুলে নেওয়া হয় মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর। পরে অবশ্য এই মন্ত্রীর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে প্রশাসন। শ্রীকান্ত ঘনিষ্ঠ চন্দ্রকোনা রোডের এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘পরে তাঁর (শ্রীকান্ত) নিরাপত্তারক্ষী ফিরিয়ে দেওয়া হলেও উনি প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেননি।’’ কোনওরকম দেহরক্ষী বা নিরাপত্তারক্ষী যে নেই তা স্বীকার করছেন মন্ত্রী নিজেও।

তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলছেন, ‘‘এখন আবাস যোজনার বাড়ি নিয়ে সর্বত্র বিক্ষোভ হচ্ছে। আসছে পঞ্চায়েত ভোট। বিরোধীদের প্ররোচনা বাড়ছে। এই অবস্থায় এক মন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াই জঙ্গলমহলে ঘোরাঘুরি বড্ড ঝুঁকি হয়ে যাচ্ছে।’’ মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, পাইলট কার, দেহরক্ষী, পুলিশ এসকর্ট ছাড়াই শ্রীকান্ত এখন বাইক চালিয়ে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র শালবনির বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছেন। কথা বলছেন মানুষের সঙ্গে। এমনকি শালবনি ছাড়া আশেপাশের ব্লক বা জেলাতে কোনও অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে তিনি গাড়িতে গেলেও, থাকছেন না কোনও নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কেনও নিচ্ছেন না নিরাপত্তারক্ষী? শ্রীকান্তের গলায় অভিমানের সুর, ‘‘কী দরকার! আমি আগেও নিতে চাইনি সিকিয়োরিটি। এখনও নয়। মানুষের কাছে থাকতেই পছন্দ করি। তাঁরাই আমার নিরাপত্তা দিচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Goaltore Srikanta Mahato
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE