দোরগোড়ায় শারদোৎসব। পুজোর ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার হিসেব কষা শুরু হয়ে গিয়েছে। পাহাড়ে অশান্তির জন্য যাঁদের পছন্দ এ বার জঙ্গলমহল, তাঁদের জন্য সুখবর। পুজোর আগেই ঝাড়গ্রাম জেলার চিল্কিগড় জঙ্গলের খুব কাছাকাছি থাকার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা। হেঁটে বেড়িয়ে উপভোগ করতে পারবেন অরণ্যপ্রকৃতি।
চিল্কিগড়ে ঘন জঙ্গলের মাঝে ঐতিহ্য প্রাচীন কনকদুর্গার মন্দির। পাশেই বইছে ডুলুং নদী। পর্যটকদের অন্যতম পছন্দ এই এলাকায় এত দিন ইচ্ছে থাকলেও রাত কাটানোর উপায় ছিল না। গোটা চিল্কিগড়ে ছিল না কোনও লজ বা হোটেল। জামবনি ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে সেই অভাব মিটতে চলেছে। জঙ্গলে লাগোয়া এলাকায় দু’কামরার অতিথিশালা তৈরির কাজ ইতিমধ্যে শেষ। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের বরাদ্দ করা ১৮ লক্ষ টাকায় তৈরি ওই অতিথিশালায় লাগোয়া বাথরুম-সহ দুটি বড় ডবল বেড রুম রয়েছে। আছে ডাইনিং হল ও রান্নাঘর। কিছু দূরে একটি পুরনো বাড়ি সারিয়ে রেস্তোরাঁ তৈরির কাজও শেষ পর্যায়ে। জামবনির বিডিও মহম্মদ আলম আনসারি বলেন, ‘‘সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে অতিথিশালাটি চালু হবে। আপাতত, ব্লক অফিসে ফোন করে অগ্রিম বুকিং হবে। পরে অনলাইনে বুকিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।’’
১৭৪৯ খ্রিস্টাব্দের আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের সপ্তমী তিথিতে জামবনি পরগনার সামন্ত রাজা গোপীনাথ সিংহ মত্তগজ স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে গভীর জঙ্গলের মাঝে কনকদুর্গার মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের পাশাপাশি, ডুলুং নদী ও জঙ্গলের সৌন্দর্যের টানে সারা বছর এখানে বহু পর্যটক আসেন। দুর্গাপুজোর মহানবমীর দিন তো লক্ষাধিক জনসমাগম হয়। বর্তমানে মন্দির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির নিয়ন্ত্রণাধীন মন্দির উন্নয়ন কমিটি। চিল্কিগড়ের মন্দির চত্বরে প্রশাসনের উদ্যোগে সৌন্দর্যায়ন ও পরিকাঠামো উন্নয়নের নানা কাজ হলেও অতিথি নিবাসের অভাব ছিল। কাছেপিঠে ভাল খাবার দোকানও ছিল না। এ বার সেই অভাব পূরণ হতে চলেছে।
যদিও মাত্র দু’কামরার অতিথিশালায় ভিড় কতটা সামলানো যাবে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ঝাড়গ্রামের একটি বেসরকারি পর্যটন সংস্থার কর্তা সুমিত দত্তের মতে, ‘‘মাত্র দু’টি ঘরের অতিথিশালায় মরসুমে হতে গোনা পর্যটক থাকতে পারবেন। আরও বেশি ঘর তৈরি করা প্রয়োজন ছিল।’’ এ প্রসঙ্গে জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সমীর ধলের বক্তব্য, ‘‘অতিথিশালাটি ভাল চললে ঘরের সংখ্যা বাড়ানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy