Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Crime

নির্ভয়া কাণ্ডে ফাঁসিতে আশায় বুক বাঁধছেন তিন নির্যাতিতার মা

সংবাদমাধ্যমে নির্ভয়া কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির খবর শুনে নিজের মেয়ের সুবিচার পাওয়ার আশায় বুক বাঁধছেন মৃত ছাত্রীর মা।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২০ ০৩:৪৫
Share: Save:

নির্ভয়া কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসি হওয়ার খবর তিন মা-কেই যেন এক সুতোয় গেঁথে ফেলেছে। কারণ তাঁদের যন্ত্রণাও এক। আত্মজকে হারানোর যন্ত্রণা।

কয়েক জন যুবকের বিকৃত প্রবৃত্তির শিকার হতে হয়েছে তাঁদের মেয়েকে। তাই নির্যাতিতা তিন নাবালিকার পরিবারই চান নির্ভয়া কাণ্ডের মতোই তাঁদের ক্ষেত্রেও দোষীদের ফাঁসি হোক।

শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টায় তিহাড় জেলে ফাঁসি হয়েছে দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত চারজনের। সাত বছরের লড়াই শেষে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন নির্যাতিতার পরিবার। আর তা দেখে সাত মাস আগে কোলোঘাটে ঘটে যাওয়া গণধর্ষণে মৃত ছাত্রীর পরিবারও অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে সরব হলেন। মেয়ের জন্য সুবিচার পেতে যতদূর যেতে হয় যাব, দাবি মৃত ছাত্রীর মায়ের। গত বছরের ২৪ অগস্ট পুলশিটা এলাকায় গণধর্ষণের শিকার হয় দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী। ঘটনার দিন রাতেই কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। ২৮ অগস্ট চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৯ অগস্ট রাতে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার। পরে ওই ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনায় ছাত্রীর প্রেমিক ও আরেক অভিযুক্ত নাবালক। বর্তমানে তারা জামিনে মুক্ত। ধৃতদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা চলছে। চলছে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের প্রক্রিয়া।

সংবাদমাধ্যমে নির্ভয়া কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির খবর শুনে নিজের মেয়ের সুবিচার পাওয়ার আশায় বুক বাঁধছেন মৃত ছাত্রীর মা। তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের অপরাধের সাজা ফাঁসি ছাড়া আর কী ই বা হতে পারে! আমার মেয়ের উপরে যারা জঘন্য অত্যাচার করেছে তারাও যে দিন ফাঁসির দড়িতে ঝুলবে সেদিন আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে।’’

আশায় বুক বাঁধছেন হলদিয়ার নির্যাতিতা ও মৃত নাবালিকার পরিবারও।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর হলদিয়া পুর এলাকার মাতঙ্গিনী বস্তি এলাকায় টিভি দেখানোর প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছিল ওই নাবালিকাকে। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের পর তাকে খুন করে দেহ বস্তাবন্দি করে লোপাটের চেষ্টার অভিযোগও ওঠে অভিযুক্ত সুজন পাত্রর বিরুদ্ধে। নির্ভয়াকাণ্ডে দোষীদের ফাঁসি হওয়ায় আশায় বুক বাঁধছেন নির্যাতিতা ও নিহত নাবালিকার মা-বাবা। তাঁদের আশা মেয়ের খুনিও এরকমভাবেই উপযুক্ত শাস্তি পাবে। মায়ের কথায়, ‘‘যে ভাবে নির্ভয়ার খুনিদের ফাঁসি হয়েছে, তাতে আশা দেখছি। আমার মেয়ের খুনি-ধর্ষকেরও ফাঁসির সাজা চাইছি। তা হলে মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে।’’

সরকার পক্ষের আইনজীবী চান্দ্রেয়ী বিশ্বাস বলেন, ‘‘ঘটনার দিন গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই জেলে আছে সুজন। যে ভাবে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে তা ভাবা যায় না। আমরা আদালতে সুজনের সর্বোচ্চ শাস্তি তথা ফাঁসি চাইব।’’

বছর দুয়েক আগে তাঁদের মেয়ের উপরে যে অত্যাচার হয়েছে, নির্ভয়া কাণ্ডে অপরাধীদের ফাঁসি হওয়ার পর তাঁদের মেয়ের ক্ষেত্রেও অভিযুক্তের তেমনই সাজা দাবি করেছেন তমলুকের নির্যাতিতার পরিবার। তমলুকের চিয়াড়া গ্রামের নাবালিকা ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দা শেখ হামিদুলকে। আদালতের নির্দেশে জেল হেফাজতে রয়েছে হামিদুল। এ দিন নির্ভয়া কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসি হয়েছে শুনে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘আমার মেয়েকেও ধর্ষণ করে খুন করেছে হামিদুল। আমিও তার ফাঁসি চাই। আদালতের উপর আমার আস্থা রয়েছে। আশা করছি বিচার পাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Nirbhaya Case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE