Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Christmas

‘গোলন্দাজ’ পাড়ায় বসছে না বড়দিনের মেলা

কয়েকশো বছর আগে মহিষাদল রাজাদের আমলে বর্গী আক্রমণ ঠেকাতে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের  পূর্ব পুরুষদের আনা হয়েছিল জেলায়।

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
মহিষাদল শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:০৭
Share: Save:

‘পুর্তগীজ’দের গ্রাম অচেনা নয় মহিষাদলবাসীর কাছে। অচেনা নয়, সেই গ্রামের বড়দিনের মেলার কথা। প্রতিবছই খ্রিস্টমাস উপলক্ষে ওই গ্রামে বসে মেলা। তবে এবার ঘটেছে ব্যতিক্রম।

মহিষাদলের গেঁওখালির বেতকুণ্ডু অঞ্চলের মীরপুর গ্রাম এলাকায় ‘পর্তুগীজদের গ্রাম’ বলে পরিচিত। কয়েকশো বছর আগে মহিষাদল রাজাদের আমলে বর্গী আক্রমণ ঠেকাতে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের পূর্ব পুরুষদের আনা হয়েছিল জেলায়। তাঁরা গোলান্দাজ হিসাবে কাজ করতেন। ওই গোলন্দাজ বাহিনীর বংশধরদের একটা বড় অংশ রয়ে গিয়েছিলেন হুগলি-রূপনারায়ণ-হলদি নদীর কাছে একটি জনপদে। সেখানেই প্রতি বছর ২৪ ডিসেম্বর থেকে নতুন বছরের প্রথম দিন পর্যন্ত মেলা বসে। এ বছর করোনা কালে সেই মেলা বসছে না। উৎসবের উৎসাহেও কিছুটা হলেও দেখা গিয়েছে ভাটা। মীরপুর গ্রামে দু’টি উপাসনালয় রয়েছে। একটি রোমান ক্যাথলিক, অন্যটি প্রটেস্টানট। একটি উপাসনালয়ের ফাদার কেশব সেন নায়েক এবং স্থানীয় উতসব কমিটির সদস্য পল তেসরা-সহ সকলে মিলে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এ বার মেলা না করার।

ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ব্লক প্রশাসন। মহিষাদলের বিডিও যোগেশচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘ব্রিটেনে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের খবর সংবাদে শুনছি। সে ক্ষেত্রে একটি ছোট জনপদ এই ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে যে সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন তা প্রংশসার।

মীরপুরের বাসিন্দা এডওয়ার্ড রথা বলেন, ‘‘বড়দিনের মেলায় হাজার হাজার মানুষ আসেন। ইতিহাসে সম্পৃক্ত আমাদের এলাকা। বাবা, ঠাকুর্দার মুখে আমাদের অতীতের গরিমার কথা শুনতাম। এঁদের মধ্যে অনেকেই মারা গিয়েছেন। নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা মেলা–খেলার মধ্যেই উদযাপন করে বড় দিন। চার্চে হয় মধ্য রাতের বিশেষ উপাসনা।’’ তবে এবার আর মধ্য রাতের বিশেষ উপাসনা হবে না বলে জানাচ্ছে রথা।

তবে মেলা না হওয়ায় ছোট ছেলেমেয়েদের মন খারাপ। কারণ, প্রতিবছর এই মেলা প্রাঙ্গণেই তো কয়েকটা দিন হই হই করে কাটে তাদের। বড়দিন এলেই গির্জায় পড়ে নতুন রঙের প্রলেপ, ক্যারল গানের মহড়া ভেসে আসে বাড়ি–বাড়ি থেকে। কেকের গন্ধে মম-মম করে পর্তুগীজদের এই পাড়া। ছোটদের কষ্টের কথা জেনেও ফাদার কেশব সেন নায়ক বলেন, ‘‘করোনার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সময় আমাদেরই তো সংযম করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Christmas fair Mirpur Village Portuguese
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE