ঘটনাস্থলে বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা। নিজস্ব চিত্র
কোনও অজ্ঞাত কারণে মুক্তি পাওয়ার কয়েকদিন পরেই শিল্প শহরের সিনেমার পর্দা থেকে বিদায় নিয়েছে ‘ভবিষ্যতের ভূত’। কিন্তু সিনেমার পর্দা ছেড়ে হলদিয়ায় ‘ভূতে’রা না কি এখন তাণ্ডব চালাচ্ছে হলদিয়ায়! অন্তত সুতাহাটা থানায় এমনই অভিযোগ করেছেন এক ব্যক্তি।
সুতাহাটার গুয়াবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা অনন্ত বাগের বাড়িতে গত কয়েকদিন ধরেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। কী ভাবে আগুন লাগছে, তা জানা যাচ্ছে না। আর তাতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ওই বাড়িতে ভূত রয়েছে। তারাই নাকি লাগাতার আগুন লাগাচ্ছে।
স্নাতক পাশ অনন্তবাবু কর্মসূত্রে ওড়িশায় থাকেন। প্রতি সপ্তাহে বাড়িতে আসেন। একই বাড়িতে থাকেন তাঁর দুই ভাই তাপস ও গৌতম বাগ। পরিবার সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে খড়ের গাদা, বাড়ির ভিতরে মিলিয়ে মোট পাঁচ জায়গায় আগুন লাগে। অনন্তবাবু বলেন, ‘‘ঘটনাটি দিন তিনেক আগের। পর পর কয়েকদিন এমন হওয়ায় বাড়ির সবাই ভয় পাচ্ছেন। কী কারণে আগুন লাগছে সেটাই বুঝতে পারছি না। তাই বিষয়টির সুরাহায় সুতাহাটা থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’
এদিকে, ‘ভূতে’র কাণ্ডকারখানার খবর ছড়ানোয় অনেকেই অনন্তবাবুদের ‘ভূতের বাড়ি’ দেখতে আসছেন। খবর পৌঁছেছে বিজ্ঞান মঞ্চেও। সম্প্রতি অনন্তদের বাড়ি যান বিজ্ঞান মঞ্চের যুক্তিবাদী কমিটির তিন সদস্য। যে সব জায়গায় আগুন লেগেছে সেখানে যান তাঁরা। নকুল ঘাঁটি নামে এক সদস্য বলেন, ‘‘স্থানীয়দের একাংশ সুকৌশলে ভূতের প্রচার করছেন। আমরা বাড়ির সকলকে আশ্বস্ত করেছি, এটি ভূতের কাণ্ড নয়। মানুষেরই কাজ।’’
অনন্তবাবুদের বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে গুয়াবেড়িয়া পঞ্চায়েত অফিস। পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ সাবিরউদ্দিন বলেন, ‘‘খবর পেয়ে ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করেছি। গুজব এবং ভৌতিক বিষয়ে মাথা ঘামাতে না অনুরোধ করেছি।’’
উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের একটি তিনতলা বাড়িতেও ‘ভূতে’র তাণ্ডবের অভিযোগ উঠেছিল। বাড়ির ভাড়াটিয়ারা অভিযোগ করেছিলেন, তিন তলার ফাঁকা ঘর থেকে রাতে গান এবং ধুপধাপ আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান ছিল, বাড়িটি বিক্রির জন্য চক্রান্ত করে কিছু দুষ্কৃতী ওই কাণ্ড ঘটাচ্ছে। পরে এক ব্যক্তি ধরা পড়ে। তার কাছ থেকে জানা যায়, নিছক আনন্দের জন্যই সে ওই ধরনের আওয়াজ করে বাড়ির লোককে ভয় দেখাত।
প্রাথমিক তদন্তে সুতাহাটার পুলিশ জানিয়েছে, এর সঙ্গে কোনও ভৌতিক ঘটনার যোগ নেই। তাদের দাবি, পরিবারের কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। সুতাহাটার বিডিও সঞ্জয় শিকদার বলেন, ‘‘খবরটি শুনেছি। যে কোনও ধরনের গুজবের বিরুদ্ধে সচেতনতার প্রচার অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy