ধৃত শেখ আবু তালহা (বাঁদিকে)। তালহার নেশামুক্তি কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
এ যেন বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা! নেশামুক্তি কেন্দ্রের আড়ালেই চলছিল মাদকের কারবার। অবশেষে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
পাঁশকুড়ার থানার পুলিশের হাতে ধৃত শেখ আবু তালহার বাড়ি পাঁশকুড়া শহরেরই কনকপুরে। পুলিশ সূত্রের খবর, বেশ কয়েক বছর ধরে পাঁশকুড়ায় হেরোইনের মতো মাদকের কারবার বাড়ছিল। পুলিশ সেই ব্যবসা বন্ধে তদন্ত এবং তল্লাশি চালাচ্ছিল। তদন্তে জানা যায়, পুর-শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কনকপুরের বাসিন্দা বছর বত্রিশের তালহা দীর্ঘদিন ধরেই হেরোইনের কারবার চালাচ্ছে।
পুলিশের চোখে ধুলো দিতে তালহা পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের কাছে তার একটি বাড়ির দোতলায় হোম খুলেছিল। সেটিকে নেশামুক্তি কেন্দ্র বলে এলাকায় প্রচারও করেছিল। পুলিশের দাবি, নেশামুক্তি কেন্দ্র বললেও সেখানে আদতে নেশাগ্রস্তদের কোনও চিকিৎসা করানো হত না। তালহার হোম ছিল আসলে মাদক কারবারি, মাদকাসক্ত ও সমাজ বিরোধীদের আখড়া। বহু দুষ্কৃতী পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ওই হোমে লুকিয়ে থাকত। তাদের কাছ থেকে মাসে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা ভাড়া নেওয়ার পাশাপাশি মাদক সরবরাহ করত তালহা। এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, বাড়িটি নেশামুক্তি কেন্দ্র হওয়ায় সেখানকার আবাসিকদের আচার-আচরণে কারও কখনও সন্দেহও
হত না।
তালহার এই মাদক ব্যবসার পদ্ধতি পুলিশ গত মাসে জানতে পারে। ডিসেম্বরেই পাঁশকুড়া থানার আইসি আশিস মজুমদারের নেতৃত্বে পুলিশ দু’বার আবুর হোমে হানা দেয়। সেই সময় একবার হোম থেকে ৮ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়েছিল। আর একবার সেখান থেকে গ্রেফতার হয়েছিল পুলিশের খাতায় ‘পেপার’ নামে পরিচিত এক দুষ্কৃতী। তার বিরুদ্ধে আগেও একটি চুরির অভিযোগ ছিল।
তবে এত দিন অধরাই ছিল চক্রের পান্ডা শেখ আবু তালহা। সে ফেরার হয়ে যায়। গত রবিবার পুলিশ জানতে পারে, তালহা এলাকায় আসছে। সেই মতো অভিযান চালিয়ে পাঁশকুড়ার মেচগ্রাম এলাকা থেকে তালহাকে গ্রেফতার করে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। ধৃতকে সোমবার তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক তার দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। আপাতত পুলিশ জানার চেষ্টা করছে যে, এর আগে কোন কোন সমাজ বিরোধীদের তালহা আশ্রয় দিয়েছিল তার ওই হোমে। তার সঙ্গে বড় কোনও মাদক চক্রের যোগ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy