অর্পণের ছবি হাতে তাঁর বাবা-মা। নিজস্ব চিত্র
অনিকেত প্রথম নন। জেলার প্রতিশ্রুতিমান ক্রিকেটারের অকালে চলে যাওয়া আগেও দেখেছে পশ্চিম মেদিনীপুর।
দিনটা ছিল ২০১৩ সালের ১৯ এপ্রিল। ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে গিয়েছিলেন সিএবি লিগের প্রথম ডিভিশনের ক্রিকেটার অর্পণ মাইতি ওরফে গুড্ডু। সেখানেই পড়ে যান তিনি। ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া মেলেনি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ঘটনাচক্রে সেই সময়ে অর্পণের বয়সও ছিল একুশ।
মেদিনীপুর শহরের ক্ষুদিরামনগরের বাসিন্দা ডান হাতি ব্যাটসম্যান অর্পণ খেলেছেন অনূর্ধ্ব ১৪, ১৬, ও ১৯ জেলা দলে। খেলেছেন বিদ্যালয় পর্যায়ের নানা প্রতিযোগিতা ও সিএবি-র আন্তঃ জেলা ক্রিকেট। ২০০৮-২০০৯ মরসুমে অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলা বিদ্যালয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। ২০১০ ও ২০১১ সালে খেলেন কলকাতার ফ্রেন্ডস স্পোর্টিং ও মের্সাস ক্লাবে। ২০১১ সিএবি-র আন্তঃ জেলা ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন পশ্চিম মেদিনীপুর দলের সদস্য ছিলেন অর্পণ। ২০১২ সালে রাজস্থান ক্লাবে সই করেন। রাজস্থান তখন সিএবি লিগে প্রথম ডিভিশনের দল।
অর্পনের স্মৃতি এখনও টাটকা মেদিনীপুর শহরের মনে। তাঁর মা সুদেষ্ণাদেবীর কথায়, ‘‘আমার মনে হয় ছেলে এখনও বেঁচে রয়েছে। বাইরে কোথাও খেলতে গিয়েছে। যে কোনও সময়ে ফিরে আসবে।’’ বাবা অরূপবাবুর কথায়, ‘‘কম বয়সে সন্তান হারানোর যন্ত্রণা খুব ভাল করে বুঝি। আর কোনও বাবা-মায়ের কোল যেন এই ভাবে খালি না হয়। আমি অনিকেতের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করবো।’’ অর্পণের ভাই সায়নের এখন ১৮ বছর বয়স। সে এখন অনূর্ধ্ব ১৯ জেলা দলে খেলছে। কলকাতায় খেলার সূত্রে সায়ন ও অনিকেত পরস্পরের পরিচিত ছিল।
কেন বার বার হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন জেলার উঠতি ক্রিকেটারেরা? শল্য চিকিৎসক দেবব্রত মাইতি জানান, চিকিৎসকদের পরিভাষায় এগুলোকে বলে ‘কার্ডিয়াক মায়োপ্যাথি’। যে সব অভিভাবক তাঁদের সন্তানকে ক্রিকেটার করার স্বপ্ন দেখছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে দেবব্রতবাবুর পরামর্শ, সবার হৃদযন্ত্র সমান ধকল নিতে সক্ষম নয়। তাই হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়মিত করতেই হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy