পার: নেই পারাপারের জেটি। নন্দীগ্রাম-বালুঘাটা ফেরিঘাট। নিজস্ব চিত্র
সম্প্রতি নন্দীগ্রাম থেকে হলদিয়া আসার পথে নৌকায় উঠতে গিয়ে পড়ে জখম হয়েছিলেন হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায়।
শুধু তন্ময়বাবুই নন, এই ঘটনা আকছার ঘটছে অনেক যাত্রীর ক্ষেত্রেই। প্রাণ হাতে নিয়েই নৌকায় ওঠানামা করতে হয় যাত্রীদের।
হুগলির ভদ্রেশ্বরে গঙ্গায় জেটি ভেঙে দুর্ঘটনা। ফের ইছাপুরে গঙ্গায় জেটির কাছে নৌকা উল্টে যাওয়া। পর পর এমন ঘটনায় হলদিয়া, মহিষাদল, নন্দীগ্রামে জলপথে যাতায়াতকারীরা আতঙ্কিত। যাত্রীদের সেই আতঙ্ক অমূলক নয়। কারণ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘাটগুলিতে জেটির অস্তিত্বই নেই। নৌকা থামলে জলে নেমেই বিপজ্জনক ভাবে ওঠানাম করতে হয় যাত্রীদের।
বন্দর নগরী হলদিয়া এবং মহিষাদলকে ঘিরে হলদি, হুগলি ও রূপনারায়ণ নদী থাকায় জলপথ এই মহকুমায় যাতায়াতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায়। হলদিয়া টাউনশিপ থেকে নন্দীগ্রামে সবচেয়ে বেশি মানুষ যাতায়াত করেন। এ ছাড়া বালুঘাটা-নন্দীগ্রাম, পাতিখালি-নয়াচর, কুকড়াহাটি-ডায়মণ্ড হারবার এবং রায়চক ফেরি পারাপার করেন বহু মানুষ। মহিষাদলের গেঁওখালি– নুরপুর এবং গেঁওখালি-মায়াচর জলপথেও প্রচুর যাত্রী পারাপার করেন। কিন্তু ঘাটগুলির পরিকাঠামো এবং যাত্রী-নিরাপত্তার প্রশ্নে বারবারই অভিযোগ উঠেছে। ভদ্রেশ্বরের ঘটনার পর যা আরও জোরালো হয়েছে।
হলদিয়া থেকে নন্দীগ্রামে প্রতিদিন হাজার পাঁচেক মানুষ নদী পারাপার করেন। নন্দীগ্রাম থেকে বহু মানুষ হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে কাজে আসেন আবার হলদিয়া থেকে নন্দীগ্রামেও কাজে যান বহু মানুষ। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে দিলেও তা নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ রয়েছে। জেটি বেশি চওড়া না হওয়ায় নৌকা থেকে ডাঙায় উঠতে গেলে খুবই অসুবিধায় পড়তে হয় যাত্রীদের।
যাত্রীদের অভিযোগ, হলদিয়ার দিকে ঘাটে আলো থাকে না। তার উপর রাতে অসামাজিক কাজ চলে। মোটর বাইক পারাপার করতেও অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হয়। নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আবু তাহের জানান, নন্দীগ্রাম–হলদিয়া ফেরি ঘাট নিয়ে কিছু সমস্যা আছে। সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। হলদিয়ার এসডিও পূর্ণেন্দু নস্কর বলেন, ‘‘বিভিন্ন অভিযোগ আসে। এর মধ্যে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ একটি বড় সমস্যা। ঘাটে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।’’
হলদিয়া– তেরপেখ্যা ঘাটে যাত্রী পারাপার চললেও কোনও জেটি নেই। ফলে জোয়ার বা ভাটার সময় নৌকায় ওঠানামায় সমস্যা হয় বলে যাত্রীদের অভিযোগ। হলদিয়া –বালুঘাটায় ফেরি পারাপারও হয় জেটি ছাড়াই। দুর্ঘটনাও ঘটে মাঝেমধ্যে।
মহিষাদলের গেঁওখালি–নুরপুর এবং গেঁওখালি–মায়াচর ঘাটেও একই অবস্থা। স্থায়ী জেটি নেই। ইটপাতা ঘাটে শ্যাওলা পড়ে পিচ্ছিল অবস্থা। তার মধ্যেই দিয়েই চলছে পারাপার। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ফেরিঘাট নিয়ে যে সমস্যা রয়েছে তা জানি। জেলা প্রশাসনকেও তা জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy