ঊর্ধ্বতন আধিকারিককে হেনস্থার অভিযোগে তিন কর্মীকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করল রেল। শুক্রবার খড়্গপুর রেল কারখানার ডিজেল শপের ওই তিন কর্মীর কাছে বহিষ্কারের নির্দেশ পৌঁছনোর পরে শোরগোল পড়েছে। গত ১৪মে ডিজেল শপে ক্যান্টিনের হাল ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন বাদল অধিকারী, কৌশিক সরকার ও সেলিম আখতার নামে ওই তিন কর্মী। তারপরই তাঁদের ‘রিমুভ ফ্রম সার্ভিস’ করায় সরব হয়েছে রেলের মেনস্ ইউনিয়ন। সিদ্ধান্ত ‘অগণতান্ত্রিক’ দাবি করে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। যদিও রেল কর্তৃপক্ষের দাবি নিয়ম মেনেই তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
নিম্নমানের খাবার, ঠিক সময়ে খাবার না দেওয়া, পর্যাপ্ত খাবারের অভাব-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে ডিজেল শপের ক্যান্টিনে। তারই বিহিত চেয়ে ১৪মে ডিজেল শপের ডেপুটি চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান কর্মীরা। সে দিন রেল সুরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভরত কর্মীদের হাতাহাতি হয়। ওই ঘটনায় রেল সুরক্ষা বাহিনীর তরফে খড়্গপুর টাউন থানায় পাঁচ কর্মীর নামে অভিযোগ জানানো হয়। রেল কারখানার সিডব্লিউএম কমিটি গড়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার দিনভর তদন্তের পরে এ দিন তিনকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। খড়্গপুর রেল কারখানার সিডব্লিউএম অনিলকুমার গুপ্ত বলেন, “এই তিন কর্মীর নেতৃত্বেই ঘেরাও-বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। পরে আমাদের রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানদের মারধর করা হয়েছিল। যে অভিযোগের ভিত্তিতে বিক্ষোভ হয়েছিল তা ঠিক নয়। তাই তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’’
রেলের মতো প্রতিষ্ঠানে ঘেরাও-বিক্ষোভের জেরে তিন চাকরি চলে যাওয়ায় আলোড়ন পড়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বহিষ্কৃত কর্মী বাদল অধিকারী। তাঁকে খড়্গপুর রেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দিন বিকেলে কারখানার কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিল রেলের মেনস্ ইউনিয়ন। সংগঠনের দক্ষিণ পূর্ব রেলের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক অজয় ঘোষাল বলেন, ‘‘একেবারে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তিনকর্মীকে চাকরি থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা জোরালো আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
সিডব্লিউএমের অবশ্য দাবি, “চাহিদা অনুযায়ী ক্যান্টিনে খাবার আনা হয়। আমাদের ডিজেল শপে ৮০০কর্মী আছে। কিন্তু প্রতিদিন ১০০কর্মীর খাবার এনেও ফেরত নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে গোলমাল করতে কর্মীরা একজোট হয়ে হঠাৎ একদিনে বেশি খাবার দাবি করেছিল। সেটা দিতে না পারায় এভাবে আধিকারিকদের ঘেরাও করে হেনস্থা করা ঠিক নয়।’’ প্রয়োজনে বহিষ্কৃত কর্মীরা ঊর্ধ্বতন আধিকারিকের কাছে আবেদন করতে পারেন বলেও জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy