ছত্রখান: মেদিনীপুরের রাস্তায় পড়ে পচা ডিম। নিজস্ব চিত্র
পচা মাংস আর পচা ডিম নিয়ে রাতদুপুরে হুলুস্থূল শহরে।
শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ শহরের নতুন বাজার দিয়ে ঢুকে জগন্নাথমন্দিরচক হয়ে স্কুলবাজারের দিকে যাচ্ছিল একটি পিকআপ ভ্যান। স্থানীয় সূত্রের খবর, জগন্নাথমন্দিরচক এলাকায় সেসময় আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন। বাঁক ঘুরতে গিয়ে হঠাৎই ভ্যান থেকে পড়ে যায় একটি ড্রাম। মুহূর্তের মধ্যে কটূ গন্ধে ভরে যায় এলাকা। আড্ডারত যুবকদের কয়েকজন গিয়ে দেখেন, নোংরা জলে ভরে গিয়েছে এলাকা। সন্দেহ হওয়ায় যুবকরা ভ্যানের ডালা খুলে দেখেন, কয়েকটিতে রয়েছে পচা মাংস ও ডিম।
শহরে ভ্যান ভর্তি পচা মাংস, পচা ডিম পাওয়া গিয়েছে— মুহূর্তের মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়ে। বাড়তে থাকে ভিড়। এরই মধ্যে ভয়ে চম্পট দেন ভ্যানের চালক। ভাগড়-কাণ্ড নিয়ে শোরগোলের মাঝে শহরে কোথা থেকে এল এই বিপুল পরিমাণ পচা মাংস আর ডিম? গুঞ্জনের পাশাপাশি ছড়ায় উত্তেজনাও। কয়েকজন ভ্যানে থাকা বেশ কয়েকটি ড্রাম উল্টে দেন। দুর্গন্ধে তখন তিষ্ঠনোর উপায় নেই। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় কাউন্সিলরকে। তিনি খবর দেন পুলিশে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ আটক করে ভ্যানটি।
স্থানীয় কাউন্সিলর সৌমেন খান মানছেন, “ওই লরিতে পচা মাংস ছিল। পচা ডিমও ছিল। দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। পুলিশের কাছে আমরা তদন্ত দাবি করেছি। গাড়িতে করে পচা মাংস কোথায় যাচ্ছিল, কেন যাচ্ছিল, এ সব জানা দরকার।” সপ্তাহ খানেক আগে কেরানিতলার অদূরে এক রেস্তরাঁয় হানা দিয়ে চমকে গিয়েছিলেন পরিদর্শকেরা। দেখা যায়, ডিপ ফ্রিজে যে মাংস রাখা রয়েছে, তার একাংশে ছত্রাক ধরে গিয়েছে। আগের অভিযানে মেদিনীপুরের একাধিক রেস্তরাঁ থেকে সন্দেহজনক মাছ, মাংস মেলে। একাধিক রেস্তরাঁর ডিপ ফ্রিজে মেলে উচ্ছিষ্ট খাবারও। এই পরিস্থিতিতে পচা মাংস, ডিম উদ্ধারে তৈরি হয় আতঙ্ক। যদিও স্থানীয়দের একাংশ এ-ও মানছেন, ভ্যানে যে ধরনের পচা জিনিস ছিল তার সাহায্যে কোনওভাবেই খাবার তৈরি সম্ভব নয়।
তা হলে? প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, পিকআপ ভ্যানে মাছের খাবার ছিল। মাছের খাবার হিসেবেই পচা মাংস, ডিম নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। মেদিনীপুরের আশেপাশের কোনও ভেড়িতে গাড়িটি পৌঁছনোর কথা ছিল। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “লরিটি কোনও এক মাছের ভেড়িতে যাচ্ছিল বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। শহরে কেন ঢুকল দেখা হচ্ছে। কোনও অনিয়ম পেলে কড়া ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।”
শনিবার রাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘আসলে ভাগাড়-কাণ্ড নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে। এখন মনে হচ্ছে না বুঝে একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গিয়েছে। আগ বাড়িয়ে এতটা ভেবে ফেলা ঠিক হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy