পুজোমণ্ডপে পড়ুয়ারা।
গ্রামে পুজো হয় না। ছেলেমেয়েদের দূরে পুজো দেখাতে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ্যও নেই দিনমজুর বাবা-মায়েদের। তাই ছাত্রছাত্রীদের শহরের প্রতিমা দর্শনের ব্যবস্থা করলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকই।
মেদিনীপুর সদর ব্লকের তফসিলি অধ্যুষিত এলাকার তসরআড়া সিদো কানহো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪০ জন ছাত্রছাত্রী পঞ্চমীর দুপুরে প্রতিমা দর্শনে এসেছিল শহর মেদিনীপুরে। এই উদ্যোগ স্কুলের প্রধান শিক্ষক অজয় ভুঁইয়ার। সঙ্গে ছিলেন সহ-শিক্ষক থেকে শুরু করে মেদিনীপুর সদর পূর্ব চক্রের স্কুল পরিদর্শক মলয় মণ্ডলও। ধবলগিরি মন্দির, গুজরাতের নবরত্ন মন্দির থেকে রাজবাড়ির আদলে তৈরি মণ্ডপ আবার কোথাও পুজো মণ্ডপে বাঁটুল দ্য গ্রেটের কাণ্ড-কারখানা দেখে কচিকাঁচারাও বেজায় খুশি। চতুর্থ শ্রেণির নীলিমা হাঁসদা, নমিতা মাণ্ডিরা বলছিল, ‘‘স্যর না থাকলে আমরা এত বড় বড় প্যান্ডেল দেখতেই পেতাম না।’’ স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন হয় দ্বিতীয় শ্রেণির চাঁদমণি হেমব্রম আগে খেলার সুবাদে শহরে এসেছে। কিন্তু পুজোর শহরে এই প্রথম পা রাখা। মণ্ডপের জাঁক আর প্রতিমার বাহার থেকে সেও হতবাক। এ দিন অটো ভাড়া করে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘোরে এই কচিকাঁচারা। স্কুলের উদ্যোগে তাদের টিফিনও দেওয়া হয়েছিল। প্রধান শিক্ষক অজয়বাবু বলছিলেন, “বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে ও শিক্ষকেরা টাকা দিয়ে সব আয়োজন করেছি।’’
এ দিন দুপুরে এক পশলা বৃষ্টিতে অবশ্য আনন্দ কিছুটা মাটি হয়। আর একটা আফশোসও থেকে যাচ্ছে। রাতের শহরে আলোর সাজ যে দেখা হল না! বিভু হেমব্রম, নমিতা মান্ডিদের কথায়, “শুনেছি রাতে নাকি নানা ধরনের আলো থাকে। সেটাই যা দেখা হল না।’’ স্কুল পরিদর্শক মলয় মণ্ডল জানালেন, রাতে প্রচণ্ড ভিড় হয়। কচিকাঁচাদের নিয়ে সেই সময় ঠাকুর দেখানোর ঝুঁকি এড়াতেই সকালে বেড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy