মর্মাহত: ভেঙে পড়েছেন মৃত সুদীপ্তর মা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে বৈঠক ছিল। মিছিল হওয়ারও কথা ছিল। বৃহস্পতিবার সকালেই তাই মকরামপুরে তৃণমূলের অঞ্চল কার্যালয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন দলের কর্মী সুদীপ্ত ঘোষ। আর বাড়ি ফেরেননি। কিছুক্ষণের মধ্যে ওই কার্যালয়েই বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে বছর তিরিশের সুদীপ্তর দেহ।
স্থানীয় অভিরামপুরে বাড়ি সুদীপ্তর। তাঁর বাবা মনোরঞ্জন ঘোষ তৃণমূলের বুথ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘সকালে মিছিল আছে বলে ছেলে বেরিয়েছিল। বাইকে সংগঠনের পতাকা বেঁধে দিতে বলেছিল, বেঁধেও দিয়েছিল। তারপর শুনলাম বিস্ফোরণের কথা।’’ স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র ঘুরে সুদীপ্তকে যখন মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়, ততক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। সেই থেকে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া, বাড়িতে কান্নার রোল। অনবরত কেঁদেই চলেছেন পুত্রহারা ঝুমাদেবী। মাঝেমধ্যে শুধু বলছেন, ‘‘ছেলেটার এমন পরিণতি কে করল?’’ কয়েক বছর আগেই বিয়ে হয়েছিল সুদীপ্তর। তাঁর স্ত্রী সুপ্রিয়ার একবছরের ছেলে সৃজনকে নিয়ে দিশাহীন অবস্থা।
খড়্গপুরের একটি কারখানায় কাজ করতেন সুদীপ্ত। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি ছিলেন। সম্প্রতি মকরামপুর প্লাস্টিক কারখানায় শ্রমিকদের নিয়ে ইউনিয়ন গড়ে তাঁকেই সভাপতি করার কথা চলছিল। তৃণমূলের মকরামপুর অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মী শীট মানছেন, ‘‘ওকেই সভাপতি করা হবে ঠিক করা হয়েছিল।’’ তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে বৈঠক ছিল এ দিন। বৈঠক শেষে শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া মকরামপুরের প্লাস্টিক কারখানার সামনে মিছিল করার কথা ছিল। সেই মতো কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হচ্ছিলেন। সকাল সকাল বাড়ি থেকে বাইকে চেপে বেরিয়ে পড়েছিলেন সুদীপ্তও।
মৃতের পরিজনেরা খুনের অভিযোগ তুলেছেন। সুদীপ্তর ভাই সৌরভ বলেন, ‘‘দাদাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। ওখানে (কার্যালয়ে) আগে থেকেই বোমা রাখা ছিল। আমরা ঘটনার সঠিক তদন্ত চাই।’’ সুদীপ্তের মামা শ্যামল ঘোষেরও বক্তব্য, ‘‘আমাদের অনুমান ওর প্রতি কোনও আক্রোশ থেকেই কার্যালয়ে ডেকে খুন করা হল। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার হয়ে গেল ছেলেটা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy