Advertisement
০২ মে ২০২৪
Subal Manna Controversy

শিশিরকে গুরু মানা সুবলের বিরুদ্ধে অনাস্থা, গুরুত্বই দিচ্ছেন না কাঁথির পুরপ্রধান

সম্প্রতি একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে এক মঞ্চে এসেছিলেন শিশির অধিকারী এবং সুবল মান্না। সেখানেই শিশিরের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন সুবল। শিশিরকে নিজের ‘গুরু’ বলেও সম্বোধন করেন। তার পরেই শুরু বিতর্ক।

শিশির অধিকারী (বাঁ দিকে), সুবল মান্না (ডান দিকে)।

শিশির অধিকারী (বাঁ দিকে), সুবল মান্না (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:০৪
Share: Save:

শিশির অধিকারীকে প্রকাশ্যে ‘গুরু’ মানা, কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সুবল মান্নার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন দলেরই কাউন্সিলরেরা। মঙ্গলবার তৃণমূলের ১৬ কাউন্সিলার সুবলের বিরুদ্ধে অনাস্থা জমা দিয়েছেন। এর পর নিয়ম মেনে চেয়ারম্যানকে অপসারণের প্রক্রিয়া এগোবে। যদিও অনাস্থাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ সুবল নিজে।

গত ২২ ডিসেম্বর, পূর্ব মেদিনীপুরের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শিশির অধিকারীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম এবং তাঁকে ‘গুরুদেব’ বলে মেনে দলের কোপে পড়েছেন কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সুবল। ওই ঘটনার পর দলের জেলা সভাপতি পীযূষকান্তি পণ্ডা তাঁকে শোকজ করেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শোকজের জবাব চাওয়া হলেও সুবল জবাব দেননি। এর পরই দলের রাজ্য নেতৃত্ব সুবলকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ পাঠান। কিন্তু সেই নির্দেশের পরও সুবল যথারীতি অফিস করছেন। তিনি ইস্তফা নিয়ে কোনও নির্দেশ পাননি বলে পাল্টা দাবি করেন। সূত্রের খবর, তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব সুবলকে পদত্যাগ করার বার্তা পাঠায়। অনড় সুবল জানিয়ে দেন, তিনি কোনও ভাবেই পদত্যাগ করবেন না। প্রসঙ্গত, কাঁথি পুরসভার ২২ জন কাউন্সিলারের মধ্যে ১৭ জনই তৃণমূলের। সুবলকে বাদ রেখে বাকি ১৬ জনই তাঁর অনাস্থার দাবিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বলে খবর।

কাঁথি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্রকাশ গিরি বলেন, “আমরা, তৃণমূলের ১৭ জন কাউন্সিলার দলের নির্দেশ মেনে চেয়ারম্যান নির্বাচন করেছিলাম। কিন্তু কিছু কারণে বর্তমান পুরপ্রধানকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলা সভাপতি-সহ দলের নেতৃত্ব। কিন্তু তিনি সেই নির্দেশ মানেননি। ৮ দিন ধরে টানাপড়েন চলছে। তিনি চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে রাজি হননি। এ বার দলের নির্দেশেই আমরা ১৬ জন কাউন্সিলার আলোচনা করে পুর আইন অনুযায়ী অনাস্থা প্রস্তাব এনেছি।’’

সুপ্রকাশের অভিযোগ, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই পুরপ্রধানের কাছ থেকে কোনও রকম সহযোগিতা পাচ্ছিলেন না। ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, “আজ অনাস্থা জমা করে এসেছি। এর পর সময়সীমা মেনে পরবর্তী পদক্ষেপ হবে। আমরা নিয়ম মেনে পুরসভার রিসিভিং বিভাগে অনাস্থা প্রস্তাবটি জমা দিয়েছি। আমরা চাই পুরসভা ভাল ভাবে চলুক।’’

যদিও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ‘শিশিরের শিষ্য’ সুবল। তিনি বলেন, “দল যা করবে করুক। সে বিষয়ে আমি কিছু মন্তব্য করব না। আইনে যা আছে তাই হবে।’’ তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রসঙ্গে সুবল জানান, “যে দিন অনাস্থা আসবে, সে দিন দেখা যাবে। আমি আইনের ঊর্ধ্বে নই। আইনে যা আছে, তাই হবে।” এরই পাশাপাশি সুবলের দাবি, তিনি ক্ষমা চেয়ে চিঠিও দিয়েছেন। সুবল বলেন, “আমাকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছিল। আমি ক্ষমা চেয়ে চিঠি দিয়েছি।” শিশিরকে নিজের রাজনৈতিক গুরু মানা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুবল অবশ্য নতুন কোনও বিতর্কের পথ মাড়াননি। তিনি স্রেফ বলেন, “সেটা কাঁথির মানুষ বলবেন। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে কী হয়েছে, তা কাঁথির মানুষ ভালই জানেন। মানুষ যা রায় দেবেন, আমি মাথা পেতে নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sisir Adhikari TMC Suvendu Adhikari BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE