Advertisement
০১ জুন ২০২৪
TMC MLA

সরকারি দোকানের মদ খেতে বলে বিতর্কে মন্ত্রী

রবিবার ছুটির দিনে নিজের বিধানসভা এলাকা ডেবরার হৈপথ গ্রামে সাইকেলে চড়ে ‘চলো গ্রামে যাই’ কর্মসূচিতে যান বিধায়ক হুমায়ুন। সেখানে তাঁকে শুনতে হয় মদের কারবার বন্ধের দাবি।

বিতর্কে হুমায়ুন কবীর।

বিতর্কে হুমায়ুন কবীর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২২ ০৯:০৪
Share: Save:

সপ্তাহ খানেক আগেই বিডিও, এসডিওর চেয়ারের গদি কেড়ে নেওয়ার দাবি করেছিলেন। এ বার বেআইনি মদ বন্ধে সরকারি দোকান থেকে মদ কিনে খাওয়ায় উৎসাহিত করলেন বিধায়ক। এমনকি ‘চলো গ্রামে যাই’ কর্মসূচিতে গিয়ে মাস কয়েক আগে মন্ত্রিত্ব হারানো ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বাতলে দিলেন মদ খাওয়ার সঠিক পরিমাণও!

রবিবার ছুটির দিনে নিজের বিধানসভা এলাকা ডেবরার হৈপথ গ্রামে সাইকেলে চড়ে ‘চলো গ্রামে যাই’ কর্মসূচিতে যান বিধায়ক হুমায়ুন। সেখানে তাঁকে শুনতে হয় মদের কারবার বন্ধের দাবি। স্থানীয় মহিলারা ঘিরে ধরেন বিধায়ককে। এলাকায় কীভাবে রমরমা মদের কারবারে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তা জানান গ্রামের মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয় পুলিশ থেকে আবগারি দফতর কেউ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এর জেরেই মাস কয়েক আগে প্রাণ গিয়েছে এক ৩৪বছরের যুবকেরও। স্থানীয় সীতা ঘোষ বলেন, “আরও কারও মায়ের কোল যেন খালি না হয় সেই ব্যবস্থা করুক সরকার। দেশি হোক বা বিদেশি মদ, একটি ৩৪বছরের ছেলে মারা গেলে আমাদের মতো মায়েরা কী করবে? পুলিশ-প্রশাসন মদের দোকান থেকে টাকা নিয়ে যায়।” এর পরেই থানার ওসিকে অভিযানের কথা বলেন হুমায়ুন। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ডেবরার বিধায়ক বলেন, “আবগারির কর্মী বল নেই না কোথায় সমস্যা জানতে হবে। দেশি মদ যেটা বিক্রি হয় সেটা দোকান থেকে এনে খাচ্ছে কি না দেখতে হবে। বেআইনি মদ থাকলে নিশ্চিতভাবে আবগারি দফতরের গাফিলতি। কিন্তু সরকারি যে মদ রয়েছে সেই মদ তো খেতেই পারে, কিনে খেতেই পারে।”

এতেই থেমে যাননি হুমায়ুন। সঙ্গে কিছুটা সতর্ক করে ঠিক কতটা মদ খাওয়া উচিত সেকথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সঙ্গে স্থানীয় পঞ্চায়েতকে একটি সচেতনতা শিবিরের আয়োজনের কথাও বলেছেন তিনি। বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, “সচেতন হতে হবে। মদ খেলেও একটা পরিমাণ মতো খেতে হবে। অনেকেই মদ খায়। কিন্তু নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় খেতে হবে। প্রচুর মদ প্রতিদিন খেলে তো লিভার, পাকস্থলীর ক্ষতি হবেই। সচেতনতা শিবির করে মদ বিরোধী প্রচারে আমরা নামব।”

এর আগেও নানা হুমায়ুনের নানা মন্তব্যে শোরগোল পড়েছিল। গত ১৭ নভেম্বর ডেবরায় প্রশাসনিক এক বৈঠকে জেলাশাসকের কাছে স্থানীয় বিডিও ও খড়্গপুরের এসডিওর বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন স্থানীয় বিধায়ক। এমনকি পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে তিনি এসডিও ও বিডিওর গদিওয়ালা চেয়ার কেড়ে কাঠের চেয়ার দেওয়ার দাবি জানান তিনি। তবে এ দিনের মন্ত্রীর কথা প্রসঙ্গে বিরোধীদের দাবি, ‘সরকারি মদ খেতেই পারেন’ বলে প্রত্যক্ষভাবে যুব সমাজকে মদ খেতে উৎসাহিত করলেন বিধায়ক। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তন্ময় দাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজেই শুল্ক পাওয়ার আশায় সিগারেট খেতে বলেন। ঢালাও মদ দোকানের লাইসেন্স দেয়। এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি। স্বাভাবিকভাবে একজন বিধায়ক ও প্রাক্তন আইপিএস হয়ে হুমায়ুন কবীর একধাপ এগিয়ে মদ খেতে উৎসাহিত করেছেন। এতে যুব সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সরকারি মদ কী স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী? আমরা প্রতিবাদে নামব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC MLA Humayun kabir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE