প্রতীকী ছবি।
একটি ধর্মীয় কর্মসূচি। একটি হামলার ঘটনা এবং এক বিজেপি নেতার ‘জেহাদি’ মন্তব্য— এই তিন বিষয় ঘিরে তাতছে নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক আবহাওয়া।
দিন কয়েক আগে নন্দীগ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই অনুষ্ঠানে আসার পথে ওসমানচক এলাকায় বাসযাত্রীদের উপর হামলার ঘটনায় শুরু হয়েছে বিজেপি এবং তৃণমূলের চাপানউতোর। শুভেন্দু হামলাকারীদের ‘জেহাদি’ বলে ঘোষণা করেছেন। হামলার ঘটনায় নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান, সোয়েম কাজি এবং শেখ সাহাবুদ্দিন-সহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন দু’জন।
গোটা ঘটনায় শুভেন্দু অধিকারী জডিত বলে এবং পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সকালে ভূতামোড় এলাকায় নন্দীগ্রাম থেকে সোনাচূড়া বাজারগামী গ্রামীণ সড়ক অবরোধ করে তৃণমূল। সকাল ৬টা থেকে ১১টা পর্যন্ত অবরোধ-বিক্ষোভের পরে মিছিল করেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা। নেতৃত্বে ছিলেন কালীচরণপুর পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ সোয়েম কাজি, তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি আলম আলরাজি এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য আয়ুব শাহ। অবরোধকারী তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশির নামে পুলিশ এলাকায় বাড়িতে ঢুকে অত্যাচার চালাচ্ছে, বাড়ি ভাঙচুর করছে। আয়ুবের বাড়িতেও বুধবার রাতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ।
সোয়েমের ভাই কায়ুম কাজি ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের সময় নিহত হয়েছিলেন। এ দিন সোয়েম বলেন, জমি রক্ষা আন্দোলনের সময় শুভেন্দু আমাদের সামনের সারিতে রেখে আন্দোলন করিয়েছেন। এখন উনি বিজেপিতে গিয়েছেন। শুভেন্দু জানেন কোন জায়গায় কাকে মামলায় জড়ালে নন্দীগ্রামের মানুষকে দমন করা যাবে। কিন্তু ওঁর ধারণা ভুল।’’ পাশাপাশি, তাঁর অভিযোগ, ‘‘হামলার দিন বাসের পিছনেই আসছিল অ্যাম্বুল্যান্স। কোনও ধর্মীয় সভায় লোক আসলে তার সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্স আসে কেন? আমরা জানতে পেরেছি, যখন ওসমানচকে ঘটনা ঘটছে, তখন শুভেন্দুর দুই প্রতিনিধি নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছিলেন আহতদের চিকিৎসার তদারকি করার জন্য। এটা তো পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নন্দীগ্রামের আর এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘এর আগে নন্দীগ্রামে একাধিক ধর্মীয় সভা হয়েছে। কখনও এমন হয়নি। বিজেপিতে যোগ দিয়ে যে দিন শুভেন্দু অধিকারী প্রথম ধর্মীয় সভায় এলেন, সে দিনই এমনটা কেন? নন্দীগ্রামের মানুষকে শুভেন্দু জেহাদি বলছেন। তাহলে কি জেহাদিদের দিয়েই তিনি এক সময় ভোটব্যাঙ্ক বাড়াতেন?’’
শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি সুফিয়ান বলেন, ‘‘পুলিশ রাতে তল্লাশির সময় গ্রামবাসীদের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে। আমরা চাই পুলিশ দোষীদের ধরুক। কোনও নির্দোষ ব্যক্তিকে হায়রানি করা চলবে না।’’ অবশ্য হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষ বলছেন, ‘‘পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
তৃণমূলের তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা (তমলুক) সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘বাসে হামলার ঘটনায় তৃণমূলের লোকজনই জড়িত। আর পুলিশ তো আমাদের জানিয়ে কাজ করে না। তাই তৃণমূলের তরফে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy