Advertisement
১৭ মে ২০২৪

খাসজমির রায়তি সত্ত্ব, জানুয়ারিতেই আবেদন! 

সমস্যায় রয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। জট কাটাতে খাসমহলের জমির রায়তি সত্ত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জেলাতেও।

খাসমহলের সেই জমি।

খাসমহলের সেই জমি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩৯
Share: Save:

সমস্যায় রয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। জট কাটাতে খাসমহলের জমির রায়তি সত্ত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জেলাতেও। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, সরকারি নির্দেশ জারি হলেই ওই এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে আবেদন নেওয়া শুরু হবে। পরে জমা পড়া আবেদন খতিয়ে দেখে রায়তি সত্ত্ব দেওয়ার কাজ শুরু হবে। আগামী মাসেই আবেদন নেওয়া শুরু হতে পারে।

মঙ্গলবার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) উত্তম অধিকারী বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মতো যাবতীয় কাজ হবে। সেই প্রস্তুতি সারা হচ্ছে।’’ জেলা প্রশাসনের এক সূত্র জানাচ্ছে, এ বার ‘গেজেট নোটিফিকেশন’ করে সরকারি নির্দেশ জারি হবে। লিখিত নির্দেশ পৌঁছবে জেলায়। এরপরই জেলা পদক্ষেপ করতে শুরু করবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শুরুতে জেলায় এক বৈঠক হতে পারে। প্রশাসনিক বৈঠক। পরে মেদিনীপুর, খড়্গপুরেও বৈঠক হতে পারে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলায় সরকারি নির্দেশ এলেই দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। প্রাথমিক প্রস্তুতি সেরে রাখা হচ্ছে। কবে থেকে আবেদন নেওয়া শুরু হবে, কবে থেকে খাজনা জমা দেওয়া যাবে, সেই সবই জানানো হবে। জেলা প্রশাসনের ওই আধিকারিকের সংযোজন, ‘‘আশা করব, এলাকার বাসিন্দারাও প্রশাসনের সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করবেন।’’

মেদিনীপুর ও খড়্গপুরের ১,৬১৮ একর জমি রায়ত থেকে খাস হয়ে যাওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছিল। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মিউটেশন, জমি কেনাবেচা থেকে ঘরবাড়ি তৈরি— সবই। মেদিনীপুরের ৪টি এবং খড়্গপুরের একটি মৌজায় এই সমস্যা রয়েছে। মেদিনীপুরের মৌজাগুলো হল কর্নেলগোলা, চাঁদিয়ানাবাজার, বাড়পাথর ক্যানটনমেন্ট এবং কেরানিতলা। খড়্গপুরে সমস্যা খাসজঙ্গল মৌজায়। এই ৫টি মৌজার জমি ১৯৪৫ সালে লিজে দেওয়া হয়েছিল ভোগদখলকারীদের। ৩০ বছরের লিজ ফুরোয় ১৯৭৫ সালে। নতুন করে লিজ দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি মেদিনীপুর সফরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে সমস্যা মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনেন বিধায়ক দীনেন রায়। বৈঠকেই ভূমিসচিব মনোজ পন্থের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে একটা খাস জমির ব্যাপার আছে। তোমরা আলোচনাতেই বিষয়গুলো ফেলে রেখে দাও। তারপর আর কাজগুলো হয় না। নেক্সট ক্যাবিনেটে যেন এটা আসে।’ কথামতো কাজও হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর মেদিনীপুর সফরের পরে মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল সোমবার। সেখানেই মেদিনীপুর-খড়্গপুরের এই জমির রায়তি সত্ত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘১,৬১৮ একর জমির রায়তি সত্ত্ব দেওয়া হল। উপকৃত হবেন লক্ষাধিক মানুষ।’’ যে সব বাসিন্দা এই জমির দখল নিয়ে রয়েছেন তাঁদের নামে সরকার জমির মালিকানার কাগজ তৈরি করে দেবে। তবে বাসিন্দাদের ১৯৭৫ সাল থেকে খাজনা মিটিয়ে দিতে হবে। খাজনা মেটানোর শর্তেই জমির রায়তি সত্ত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Khasmahal West Bengal cabinet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE