প্রতীকী ছবি।
বৌমা অসুস্থ হওয়ায় শাশুড়িকে ডাইনি অপবাদে মারধরের অভিযোগ উঠল পাঁশকুড়ার গ্রামে। গত শনিবার বিকেলে সালিশি সভা ডেকে বছর পঞ্চাশের ওই মহিলাকে ‘ডাইনি’ সাব্যস্ত করে মাতব্বররা। তারপরেই তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সব জানতে পেরে সোমবার ওই মহিলার মেয়ে গ্রামে গিয়ে আহত অবস্থায় মাকে উদ্ধার করেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের হস্তক্ষেপে এ দিনই থানায় ঘটনার মৌখিক অভিযোগ জানানো হয়।
পাঁশকুড়া শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রামে স্কুল রয়েছে। এলাকায় রয়েছে উচ্চ বিদ্যালয়ও। তারপরেও এই গ্রামে এ ভাবে ডাইনি অপবাদে মারধরের ঘটনায় সচেতনতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দিলীপ সাঁতরা বলেন, ‘‘ওই গ্রামে ২০টি আদিবাসী পরিবার রয়েছে। আদিবাসী পাড়ায় ডাইনি অপবাদে এক মহিলাকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার কথা বিডিওকে ও থানায় জানিয়েছি।’’ সচেতনতার অভাবেই যে এই ঘটনা ঘটেছে তা মানছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সচেতনতার অভাবের কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আমরা স্থানীয় বাসিন্দাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি।’’ পাঁশকুড়ার বিডিও বিকাশ দত্ত বলেন, ‘‘ঘটনার কথা জেনেছি। কাল, মঙ্গলবার ওই গ্রামে গিয়ে দু’পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করব।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার ছেলের শ্বশুরবাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। জ্বরে ভোগার পর ওই মহিলার বৌমা দিন কয়েক ধরেই অসুস্থ। দিন কয়েক আগে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে বৌমার বাপের বাড়ির লোকেরা এসে মেয়ে-জামাইকে তাদের বাড়িতে যায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের ধেড়ুয়া এলাকার এক জানগুরুর কাছে মেয়ে-জামাইকে নিয়ে যায় তারা। জানগুরু নিদান দেয়, ওই মহিলার শাশুড়ি ‘ডাইনি’। তাই সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পাঁশকুড়ার গ্রামে ফিরে এসে তারা এলাকার মাতব্বরদের কাছে এই কথা জানান।
শনিবার বিকেলে বছর পঞ্চাশের ওই মহিলার বাড়ির সামনেই মাতব্বররা সালিশি সভা ডাকে। সেই সভাতেই বৌমার অসুস্থাতার জন্য তার শাশুড়িকে ডাইনি সাব্যস্ত করা হয়। তারপর তাঁকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। গ্রামের অন্য একটি পাড়ার বাসিন্দারা সেখানে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। ঘটনার কথা জানতে পেরে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থেকে ওই মহিলার মেয়ে, জামাই সোমবার মায়ের কাছে আসেন। তাঁরা পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে গিয়ে এই ঘটনার কথা জানান। পঞ্চায়েত প্রধানের হস্তক্ষেপে আহত ওই মহিলাকে বাড়ি থেকে উদ্ধার করে এ দিন বিকেলে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy