সরকার অনুমোদিত ওড়িয়া মাধ্যম স্কুলে বেআইনিভাবে ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়া ভর্তি নিয়ে তাদের দায় অস্বীকার করছেন কর্তৃপক্ষএই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকরা। পৃথক ইংরেজি মাধ্যম খোলার আশ্বাস দিয়ে খড়্গপুরের সরকার অনুমোদিত ওড়িয়া মাধ্যম স্কুল উৎকল বিদ্যাপীঠে চলতি শিক্ষাবর্ষের শুরুতে পঞম শ্রেণিতে ১৯ জন পড়ুয়াকে ভর্তি নেওয়া হয়। কিন্তু এখন পরিকাঠামো না থাকার অজুহাতে স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই পড়ুয়াদের অন্যত্র ভর্তি হওয়ার কথা বলায় সোমবার স্কুলে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা।
২০০৮ সাল থেকে স্কুল শিক্ষা দফতরের অনুমতি ছাড়াই উৎকল বিদ্যাপীঠ স্কুল চত্বরে একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে। ‘উৎকল মডেল স্কুল’ নামে ইংরেজি মাধ্যমের ওই স্কুলে নার্সারি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। ওই স্কুলের পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন উৎকল বিদ্যাপীঠের পরিচালন সমিতির সভাপতি, সম্পাদক ও প্রধান শিক্ষক। গত জানুয়ারি মাসে ওই প্রাথমিক স্কুল থেকে পাশ করা পড়ুয়া-সহ ১৯জনকে উৎকল বিদ্যাপীঠের পঞ্চম শ্রেণিতে ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি করা হয়। সেই সময় স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন চালু করার কথা জানায়। কিন্তু চলতি মাসের শুরুতে স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই পড়ুয়াদের অন্যত্র ভর্তি করার কথা তাদের অভিভাবকদের জানায়। এমনকী শিক্ষকের অভাবে স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই প্রাথমিক স্কুলটিও বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানিয়েছে। এক অভিভাবক সজ্জন সিংহের কথায়, “আমরা এই হাইস্কুলে ছেলেমেয়েকে ভর্তি করেছিলাম। এখন কী করব বুঝতে পারছি না।”
স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রকুমার বেহুরার অভিযোগ, “স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক মিলেই যা করার করেছে। পরিচালন সমিতির সভাপতি ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা তছরুপ করেছেন। এখন শিক্ষকদের বেতন দিতে না পেরে ওই বেসরকারি স্কুল বন্ধ করতে চাইছে। গত ২১ মার্চ আমি পুলিশে স্কুলের অর্থ তছরুপের অভিযোগও জানিয়েছি।” শিক্ষা দফতরের অনুমতি ছাড়া কী ভাবে ওই বেসরকারি স্কুল চলছে? তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই ওই স্কুলটি চলছে বলে প্রধান শিক্ষক জানান। সব কিছু জেনেও তিনি কেন অভিযোগ করেননি? প্রধান শিক্ষক এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।
যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি করুণাধর পান্ডা। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “প্রধান শিক্ষকও যে সময় ওই বেসরকারি স্কুলের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন, সেই সময়ের টাকার হিসেব উনি দিতে পারেননি।” করুণাধরবাবু বলেন, “পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়া ভুল হয়েছে। আমরা চাই ওই প্রাথমিক স্কুল বন্ধ হয়ে যাক।” তবে ভর্তি হওয়া পড়ুয়াদের কী হবে, সেনিয়ে তিনি কিছু বলেননি।
এ দিন ওয়ার্ড এডুকেশন কমিটির সভাপতি শিবাজি রাও স্কুলে এসে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ উঠে যায়। শিবাজিবাবু বলেন, “সরকারি অনুমতি ছাড়াই ওই প্রাথমিক স্কুলটি চলছে। স্কুলটি বন্ধ হেলে পড়ুয়ারা অসুবিধায় পড়বে। তাই আপাতত ওই বেসরকারি স্কুলেই পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস চালানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ওই বেসরকারি স্কুলটির অনুমোদনের জন্য শিক্ষা দফতরে আবেদন করা হবে।” এ বিষয়ে জেলা বিদ্যলয় পরিদর্শক সংঘমিত্র মাকুড় বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। কেন পঞ্চম শ্রেণিতে ওই স্কুল ছাত্র ভর্তি করল, তা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy