বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা সব কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আগামী জানুয়ারির শেষে হতে পারে। সোমবার অধ্যক্ষদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বৈঠক হয়। ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী, রেজিস্ট্রার জয়ন্তকিশোর নন্দী-সহ পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারাও। জানা গিয়েছে, বৈঠকে প্রাথমিক ভাবে, ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি-এই দু’টি দিন নিয়ে আলোচনা হয়। এই দু’দিনের মধ্যেই কোনও একদিন কলেজগুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতে পারে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জনবাবু বলেন, “নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটা প্রাথমিক আলোচনা। দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। শীঘ্রই চূড়ান্ত হবে।”
গত বছর দু’দিনে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছিল। ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। ২৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। সে বার একই দিনে সমস্ত কলেজে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এ বারও কী সেটাই হবে? বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা বলেন, “ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে অশান্তির ঘটনা ঘটেই। তবে গতবার একদিনে সমস্ত কলেজে নির্বাচন হওয়ায় অশান্তির ঘটনা কম ঘটেছে। এ বারও তাই একদিনেই সমস্ত কলেজে নির্বাচন করা নিয়ে আলোচনা চলছে।” তিনিই জানান, এ দিন বৈঠকে প্রাথমিক ভাবে দু’টি দিন নিয়ে আলোচনা হয়। ২৮ এবং ২৯ জানুয়ারি। তেমন হলে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচন এক দিনেই হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সূত্রে খবর, শীঘ্রই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দিন চূড়ান্ত হবে। কলেজগুলোকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। পরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে।
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ৪৫টি কলেজে রয়েছে। সংসদ নির্বাচন ঘিরে ফি বছর অশান্তি হয়। এক সময় যে সব কলেজে এসএফআইয়ের দাপট ছিল, এখন সেখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাপট রয়েছে। বিভিন্ন মহলের মতে, দখলদারির মানসিকতাই ছাত্র সংঘর্ষে আগুন দেয়। সব ক’টি ছাত্র সংগঠনেরই উচিত, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে সব রকম সহযোগিতা করা। গতবার থেকে অনলাইন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ বারও অনলাইন চালু থাকবে। তবে অনলাইনে শুধু মনোনয়নপত্র তোলাই যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে গিয়ে তা জমা দিতে হবে প্রার্থীকেই। প্রত্যাহারের ক্ষেত্রেও প্রার্থীকে উপস্থিত থাকতে হবে। বিরোধী সংগঠনগুলো অবশ্য অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ারও দাবি জানিয়েছে।
ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মহম্মদ সইফুল বলেন, “গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। যাঁরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করছেন, তাঁদের উপর টিএমসিপি চড়াও হচ্ছে। অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হোক। তাহলে অশান্তি কম হবে।” ডিএসওর জেলা সভাপতি দীপক পাত্র বলেন, “অনলাইন-অফলাইন দু’টোই চালু থাকুক। দু’টো চালু থাকলেই ছাত্রছাত্রীদের সুবিধে হবে।” এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডা বলেন, “গতবার আমাদের বেশ কিছু মনোনয়ন ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। টিএমসিপির কর্মীরা কলেজ ক্যাম্পাসেই গুণ্ডামি করেছে। অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হোক।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি অবশ্য বলেন, “গতবার সুষ্ঠু ভাবেই নির্বাচন হয়েছে। বিরোধী সংগঠনের কোন সদস্য মনোনয়ন তুলতে এসেছেন আর আমরা বাধা দিয়েছি ওরা বলুক! বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যা সিদ্ধান্ত নেবেন, আমরা মেনে নেব।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জয়ন্তকিশোর নন্দী বলেন, “এ বার অনলাইন চালু থাকবে। অনলাইনে মনোনয়নপত্র তোলা যাবে। জমা দিতে হবে প্রার্থীকেই।” তাঁর কথায়, “সুষ্ঠু ভাবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করতে সব রকম পদক্ষেপই করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy