টানা দু’মাস কর্মবিরতির পর সোমবার তা প্রত্যাহার করে নিলেন ঝাড়গ্রাম মহকুমা আদালতের আইনজীবী ও মুহুরিরা।
ঝাড়গ্রাম মহকুমা আদালতে অতিরিক্ত আরও তিন জন বিচারক ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক আদালত-কর্মী নিয়োগের দাবিতে গত ৬ জানুূয়ারি থেকে আইনজীবীদের দু’টি এবং মুহুরিদের একটি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’ কর্মবিরতি শুরু করে। এর ফলে গত দু’মাস ধরে দৈনিক পুলিশ ফাইলটুকু ছাড়া বাদবাকি কোনও মামলারই শুনানি হচ্ছিল না। তাতে জঙ্গলমহলের বিচারপ্রার্থীরাই সমস্যায় পড়েছিলেন।
আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, আদালতের বিভিন্ন এজলাসের উপযুক্ত ভবন রয়েছে। রয়েছে বিশাল প্রাঙ্গণ। কিন্তু উপযুক্ত সংখ্যক বিচারক ও কর্মীর অভাবে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার মতো পরিকাঠামোই নেই ঝাড়গ্রাম আদালতে। এর ফলে, বিচার পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় বিচারপ্রার্থীদের। সমস্যা সমাধানের জন্য গত ৯ জানুয়ারি মেদিনীপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সুজিত ঝা আদালতে এসে আন্দোলনকারী জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেন। এরপর গত ১৭ জানুয়ারি আদালতে আসেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা বিচারক রাই চট্টোপাধ্যায়। তিনিও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার পরে দাবি সমূহের বিষয়ে উচ্চ আদালতকে অবহিত করার আশ্বাস দেন। তা-ও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেননি আইনজীবী-মুহুরিরা।
ইতিমধ্যে আন্দোলনকারী জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির প্রতিনিধিরা রাজ্য বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, জোনাল জজ, জুডিশিয়্যাল সেক্রেটারি, কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করে দাবিপত্র দেন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বার কাউন্সিলের তিন প্রতিনিধি ঝাড়গ্রাম আদালতে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দাবিগুলি নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলকে জানানো হবে বলে আশ্বস্ত করেন বার কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা। তারপরও অবশ্য আন্দোলন থেকে সরে আসেননি আইনজীবী ও মুহুরিরা। দু’মাস পেরিয়ে গেলেও আইনজীবী ও মুহুরিদের কোনও দাবিই পূরণ হয়নি। আন্দোলনকারী জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির মধ্যে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা রয়েছেন। কিন্তু, দাবি তাঁরা উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলেন কমিটিরই একাংশ। আন্দোলনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন আইনজীবী-মুহুরিদের একাংশ। গত শুক্রবার জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির এক বৈঠকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঝাড়গ্রাম আদালতের আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, “কমিটিতে শাসক দলের প্রভাবশালী শহর-নেতারা থাকা সত্ত্বেও, তাঁরা দাবিপূরণের প্রতিশ্রুতি আদায় করতে পারলেন না। এটা দুঃখের বিষয়!”
জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির আহ্বায়ক তথা তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম শহর সভাপতি প্রশান্ত রায়ের অবশ্য দাবি, “কলকাতা হাইকোর্টের তরফে আমাদের দাবিগুলি বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy