Advertisement
১৬ মে ২০২৪
অভিযুক্ত টিএমসিপি

টিচার ইন-চার্জকে তালাবন্দি করে বিক্ষোভ

দলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসে বৃহস্পতিবারই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠ শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার কথা ছাত্রদের স্মরণ করিয়ে দেন। এর আগেও একাধিকবার দলের শীর্ষ ছাত্র সংগঠনকে সংযত থাকার বার্তা দিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
এগরা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৪ ০০:২৭
Share: Save:

দলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসে বৃহস্পতিবারই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠ শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার কথা ছাত্রদের স্মরণ করিয়ে দেন। এর আগেও একাধিকবার দলের শীর্ষ ছাত্র সংগঠনকে সংযত থাকার বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও যে কাজের কাজ কিছুই হয়নি, এ দিন ফের তার প্রমাণ মিলল পটাশপুর-১ ব্লকের যোগদা সত্‌সঙ্গ পালপাড়া মহাবিদ্যালয়ের ঘটনায়। ভর্তি প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর সদস্যরা কলেজের এমএড বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেয়। তারপর বিকেল ৩টে নাগাদ কলেজের টিচার ইন চার্জ তুষার চক্রবর্তীর ঘর-সহ অধ্যাপকদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে তারা বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। কলেজের প্রধান প্রবেশপথেও তালা লাগিয়ে দেওয়া হয় হলে অভিযোগ। তাঁদের অভিযোগ, কলেজের এমএড পাঠ্যক্রমে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ম মেনে হয়নি। এক্ষেত্রে টিএমসিপি পরিচালিত কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কলেজ কতৃর্পক্ষ কোনও রকম আলোচনা না করেই ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করেছেন। উল্লেখ্য, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম ওই কলেজে এমএড বিভাগ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ওই কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুমন সামন্তর অভিযোগ, “এমএড বিভাগে ভর্তি প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হয়েছে। এক্ষেত্রে কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করেই ভর্তি প্রক্রিয়া চালিয়ে গিয়েছেন।” তাঁর দাবি, এ দিন আমরা এবিষয়ে টিচার ইন চার্জের সঙ্গে আলোচনা করতেই গিয়েছিলাম। কিন্তু উনি আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি হননি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। প্রায় এক ঘণ্টা টিচার ইন চার্জকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ চলতে থাকে। পরে পটাশপুর থানার পুলিশ গিয়ে তাঁকে ঘেরাও মুক্ত করে। যদিও আলোচনায় বসতে না চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তুষারবাবু বলেন, “এমএড বিভাগে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ম মেনেই হয়েছে।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “আমাকে কিছু না জানিয়ে কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে বহিরাগতরা মিলে এ দিন দুপুরে এমএড বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেয়। কলেজের ছাত্ররা বেআইনি কাজের অভিযোগ তুলে আমাকে ঘেরাও করে রাখবে, এই ঘটনায় আমি মর্মাহত।” পুলিশের সামনেই ছাত্ররা তুষারবাবুর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন। ভর্তি প্রক্রিয়ায় অসঙ্গতি নিয়ে তদন্ত করারও দাবি জানায় তাঁরা। এছাড়াও কলেজের খেলার মাঠ সংস্কার, জিম চালু, লাইব্রেরিতে কম্পিউটার পরিষেবা চালু করা, অধ্যাপকরা যাতে নিয়মিত ক্লাস নেন, সে বিষয় সুনিশ্চিত করা-সহ একাধিক দাবিও জানায় তারা। আগামী চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে এবিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া না বলে বড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়াড়িও দেওয়া হয়। তুষারবাবু জানান, বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হবে। ছাত্রদেরও আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে। টিএমসিপি’র পটাশপুর ১ ব্লক সভাপতি তাপস মাজি বলেন, “ওই ঘটনার খবর পেয়েই আমি ছাত্রদের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলি।” যদিও টিচার ইন চার্জকে ঘেরাও করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করে টিএমসিপি’র পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীপক দাস বলেন, “ছাত্র সংসদ টিচার ইন চার্জকে স্মারকলিপি দিয়েছিল বলে শুনেছি। এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখব।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অধ্যক্ষের কাছ থেকে ফোনে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁকে ঘেরাও মুক্ত করে। এ বিষয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, “এটি ছাত্রদের বিষয় নয়। এনিয়ে জ্যোতির্ময় করের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি বিষয়টি মিটে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE