ভোটগণনার সময় যোগফলের ত্রুটিতেই সবং বিধানসভা এলাকায় দলীয় প্রার্থী মানস ভুঁইয়া পিছিয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ তুলল কংগ্রেস। সোমবার ঘাটাল লোকসভার রিটার্নিং অফিসার সুশান্ত চক্রবর্তীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই কেন্দ্রে কংগ্রেসের এজেন্ট নিখিল বর্মন। তাঁর দাবি, সবংয়ের একটি বুথে গণনার ত্রুটিতেই খাসতালুকে পিছিয়ে পড়েছেন মানসবাবু। সেই ত্রুটি শুধরে পুনরায় ঘাটাল কেন্দ্রের ফল ঘোষণার দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস।
ঘাটাল কেন্দ্র থেকে ২,৬০,৮৯১ ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দীপক অধিকারী অর্থাৎ দেব। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৬,৮৫,৬৮৪টি। ৪,২৪,৭৯৩টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন সিপিআই প্রার্থী সন্তোষ রাণা। আর তৃতীয় স্থানে থাকা কংগ্রেস প্রার্থী মানসবাবুর প্রাপ্তি ১,২২,৯২৪টি ভোট। ঘাটাল কেন্দ্রের অধীন ৭টি বিধানসভার মধ্যে ৬টিতেই এগিয়ে তৃণমূল। একমাত্র সবং বিধানসভাতেই পিছিয়ে রয়েছেন দেব। তবে খাসতালুক সবংয়ে এ বার মানসবাবুর নন লিড পেয়েছেন বাম প্রার্থী। তা-ও মাত্র ৬৮ ভোটে। সবংয়ে সন্তোষবাবু পেয়েছেন ৬৫,৭২৭টি ভোট আর মানসবাবু পেয়েছেন ৬৫,৬৫৯টি ভোট। এই বিধানসভায় দেব পেয়েছেন ৬১,৯৯০টি ভোট।
কংগ্রেসের দাবি মেনে সবংয়ে যদি মানসবাবু লিড পান, তাতেও ঘাটাল কেন্দ্রের ফল বদলানোর কোনও সুযোগ নেই। তবু পুনরায় ফল ঘোষণার দাবি কেন? কংগ্রেস সূত্রের খবর, নিজের খাসতালুক সবংয়ে পিছিয়ে পড়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি মানসবাবু। সেই ১৯৮২ সাল থেকে তিনি সবংয়ের বিধায়ক। এলাকাটিও কংগ্রেসের গড় হিসেবেই পরিচিত। ফলে, সবংয়ে পিছিয়ে পড়া মানসবাবুর সম্মানের প্রশ্ন। পোড়খাওয়া এই কংগ্রেস নেতার কথায়, “প্রচারে এসে তৃণমূল নেত্রী সবংয়ের মাটিতে আমাকে পুঁতে ফেলার ডাক দিয়েছিলেন। তাই চক্রান্ত করে আমাকে অপমান করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে সবং থেকে হেরে গিয়েছিলেন মানসবাবু। বিপ্লবী বাংলা কংগ্রেসের প্রার্থী মাখনলাল বাঙালের কাছে ৮২৫ ভোটে হারের পর রিগিংয়ের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মানসবাবু। তিন বছর পরে আদালত ওই নির্বাচন বাতিল বলে ঘোষণা করে। ২০০১ সালের নির্বাচনে অবশ্য ফের হেরে যান মানসবাবু।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর দলের প্রাথমিক ভোট পর্যালোচনায় দেখা যায় সবংয়ের সার্তা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আদাসিমলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮৩ নম্বর বুথের গণনায় ত্রুটি রয়েছে। কংগ্রেসের দাবি, ৪ নম্বর টেবিলে ৫ রাউন্ডের শেষে সিপিআই প্রার্থীর ভোট দাঁড়িয়েছিল ২৫৬ ও কংগ্রেস প্রার্থীর ২৯০। কিন্তু হিসেব মেলানোর মূলপত্রে সিপিআই প্রার্থীর ভোট ২৫৬টি ধরা হলেও কংগ্রেসের ভোট ৯০টি ধরা হয়। তাতেই হিসেবে গরমিল হয় বলে অভিযোগ। তাই ফল সংশোধনের দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস। দলের জেলা সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়া বলেন, “অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনকে আমরা সঠিক ফল প্রকাশ করতে বলেছি।” অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ঘাটালের রিটার্নিং অফিসার সুশান্ত চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্য, “অভিযোগ আমরা খতিয়ে দেখছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy