ম্যাথু জর্জ। নিজস্ব চিত্র।
বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হল অ্যাসেম্বলি অফ গড চার্চ স্কুলের হলদিয়ার শাখার এক ছাত্র। একাদশ শ্রেণির ম্যাথু জর্জ স্কুলেরই অধ্যক্ষ কে এম জর্জের ছেলে। তিনি হলদিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন। সোমবার সকালের এই ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ অবশ্য বিষয়টিকে স্বেচ্ছায় ঘর ছাড়ার ঘটনা হিসেবে দেখছে। তবে এ ব্যাপারে অন্য কারও হাত আছে কি না, তা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হলদিয়া)অমিতাভ মাইতি বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
হলদিয়া টাউনশিপের ক্লাস্টার ৬-এর বাসিন্দা কে এম জর্জ ও তাঁর-স্ত্রী রিনি জর্জ ওই স্কুলেরই অধ্যক্ষ এবং শিক্ষিকা। তাঁদের ছেলে ম্যাথু দিল্লি বোর্ডের অধীন ওই স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। টাউনশিপেরই ক্লাস্টার ৯-এ অবস্থিত ওই স্কুল থেকে তাঁদের বাড়ির দূরত্ব প্রায় দেড় কিলোমিটার। প্রতিদিন জর্জ দম্পতি নিজেদের গাড়িতে স্কুলে গেলেও বছর ষোলোর ম্যাথু সাইকেলেই যেত।
সোমবার সকাল আটটা থেকে প্রথম ত্রৈমাসিক পরীক্ষা ছিল ম্যাথুর। জর্জ দম্পতি জানান, তাঁদের পেছন পেছনই সাইকেলে আসছিল ম্যাথু। পরে তাঁরা বুঝতে পারেন, ছেলে এ দিন স্কুলেই আসেনি। তার মোবাইল ফোনও সুইচ অফ ছিল। বন্ধু-বান্ধবের কাছে এবং অন্যত্র খোঁজ নিয়ে ম্যাথুর কোনও সন্ধান না পাওয়ায় তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হন।
জর্জ পরিবারের ঘনিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় ম্যাথুর সঙ্গে সাইকেল, রেন কোট ও মোবাইল ছিল। এ দিন অবশ্য সাইকেলেরও খোঁজ পাওয়া যায়নি।” ছেলের খোঁজে জর্জ দম্পতি বাড়ি ফিরে দেখেন, ম্যাথু নিজের মোবাইলের সিম কার্ডটি রেখে গিয়েছে। পুলিশ তদন্তে জেনেছে, ‘পকেট মানি’র দেড়-দুই হাজার টাকাও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছে ম্যাথু।
ছেলের আকষ্মিক অর্ন্তধানে ভেঙে পড়েছেন জর্জ দম্পতি। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কে এম জর্জ। তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছি। ওর চলে যাওয়ার পিছনে সঙ্গত কোনোও কারণ নেই। অপহরণের সম্ভাবনাও যেমন উড়িয়ে দিচ্ছি না, তেমনি কারোর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ঘর ছাড়ার সম্ভাবনাও আছে।”
ম্যাথুর সহপাঠীদের একাংশ এই ঘটনায় অবাকই হয়েছে। তাদের মতে, ম্যাথু যথেষ্ট মেধাবী ও দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন ছেলে। বরাবরই শান্ত ও সংযত থাকে। সকলের সঙ্গেই ম্যাথুর সদ্ভাব ছিল। তবে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে, পড়াশোনা নিয়ে কিছুটা মানসিক চাপে ছিল সে। এর থেকে অব্যাহতি পেতে সে এই পথ নিয়েছে কি না ,তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy