হাপিত্যেশ প্রতীক্ষার পরে বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপের টানে সোমবার বর্ষা ঢুকেছে গাঙ্গেয় বঙ্গে! কিন্তু বৃষ্টি কোথায়?
বর্ষা মানে সকাল থেকে আকাশ কালো করা মেঘ। বর্ষা মানে দফায় দফায় বৃষ্টি। সোমবার কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ উপকূলের আকাশের সঙ্গে বর্ষার আবহাওয়ার মিল ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকেই উবে যায় সেই আবহাওয়া। ইতিউতি মেঘ ঘুরে বেড়ালেও বৃষ্টি নামানোর মতো কালো মেঘ এ দিন বিশেষ দেখা যায়নি।
বর্ষার স্বাভাবিক চেহারাটা কই?
আবহবিদেরা জানান, এ বারের বর্ষার চরিত্র কিছুটা আলাদা। মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে বর্ষা সমাগমের পথ দু’টি। কেরল-পথ আর আন্দামান-পথ। সাধারণ ভাবে মৌসুমি বায়ু কেরল-পথ ধরে দক্ষিণবঙ্গে পৌঁছয়। আন্দামান থেকে মায়ানমার হয়ে অন্য পথে বর্ষা ঢোকে উত্তরবঙ্গে। এ বার আন্দামান-পথে মায়ানমার হয়ে বর্ষা অসমে পৌঁছে থমকে যায়। ফলে উত্তরবঙ্গের দোরগোড়ায় এসেও ওই পথে সেখানে ঢুকতে পারেনি সে। কেরল-পথে ঢোকা মৌসুমি বায়ুও দাক্ষিণাত্যে আটকে ছিল কিছু দিন। তার পরে সে পশ্চিম ভারতের এক ছিনতাইবাজ নিম্নচাপের খপ্পরে পড়ে। বঙ্গোপসাগরের পাল্টা একটি নিম্নচাপ বর্ষাকে উদ্ধার করে দক্ষিণবঙ্গে নিয়ে আসে। সেই নিম্নচাপের ধাক্কায় একই দিনে বর্ষা পৌঁছেছে উত্তরবঙ্গেও।
আরও পড়ুন: উত্তরে মেঘ, এ বার বৃষ্টির পালা
আবহবিদেরা জানান, মৌসুমি বায়ু যে এ বার ভিন্ন রাস্তায় উত্তরবঙ্গে ঢুকল, সেই পথ-পরিবর্তনের জেরে বাংলার উত্তর ও দক্ষিণে বর্ষণেরও হেরফের ঘটছে। মৌসম ভবনের এক আবহবিদ জানাচ্ছেন, কেরল-পথে আসা বর্ষা কোচবিহারে পৌঁছনোর পরে তার জেরে অসমে আটকে থাকা বর্ষার অন্য শাখাটি নেমে এসেছে নীচে। মৌসুমি বায়ুর দু’টি পথ মিলে গিয়ে উত্তরবঙ্গে বর্ষা বাড়তি শক্তি পাচ্ছে। বঙ্গোপসাগরের জলীয় বাষ্প টেনে নিচ্ছে উত্তরবঙ্গে অতিসক্রিয় বর্ষা। মৌসম ভবন আগামী তিন দিনের যে-পূর্বাভাস দিয়েছে, তাতে শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। তবে হিমালয় সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গে উত্তরোত্তর বৃষ্টি বাড়বে। বৃহস্পতিবার নাগাদ উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
কী হবে দক্ষিণবঙ্গের?
হাওয়া অফিস বলছে, উত্তরবঙ্গে মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা কিছুটা কমলে কিংবা বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন এলাকায় নতুন ঘূর্ণিঝড় বা ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হলে দক্ষিণবঙ্গে জোরদার হতে পারে বর্ষা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy