পুজোর কাজে ব্যস্ত সিমরান। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
প্রতিমা কেনা থেকে পুজোর সরঞ্জাম, ফল-মিষ্টির বাজার থেকে পুরোহিত জোগাড়, এমনকি ফলকাটা, আলপনা দেওয়াটুকুও করেছেন ওঁরা। আর সেই জন্যই এ বারের সরস্বতী পুজো করা সম্ভব হল রামপুরহাটের একটি বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে। এঁদের এক জন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মী হাসনাত শেখ, অন্য জন প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সিমরান।
প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার আতিউর রহমান জানান, করোনা আবহে পড়ুয়ারা এখন অনলাইনে পড়াশোনা করছে। তার উপরে বেশির ভাগ পড়ুয়া বাইরে থেকে আসা। এই পরিস্থিতিতে সরস্বতী পুজো হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। তা ছাড়া, পুজোর দায়িত্ব কে নেবেন, তাই নিয়েও অনেকের মধ্যে গা ছাড়া মনোভাব ছিল। সিমরান এবং হাসনাতই তাঁকে পুজো করতে উদ্বুদ্ধ করেন। এটা মেনে পারেননি পড়ুয়া সিমরান। তিনি পাশে পান প্রতিষ্ঠানের কর্মী, পেশায় গাড়ি চালক হাসনাতকে। হাসনাত জানান, এই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছোটদের স্কুলও চালু আছে। সেখানকার অভিভাবকদের অনেকে পুজো করতে চেয়েছিলেন। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়। তার পরে তাঁরাই পুজোর যাবতীয় দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেন। সেটা সফল ভাবে করেও দেখিয়েছেন এ দিন। আতিউরের কথায়, ‘‘ওঁদের ছাড়া প্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পুজো করা বাস্তবিকই সম্ভব ছিল না।’’
এ দিন ওই শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা গেল, পুজো দেখতে এসেছে বহু পড়ুয়া। চলছে মজা, গল্প। আর সে-সব অন্যদের সঙ্গে দায়িত্বের সঙ্গে সামলাচ্ছেন সিমরান, হাসনাতেরা। সিমরান বললেন, ‘‘এই দৃশ্যটা দেখব বলেই তো পুজোর দায়িত্ব নিয়েছি আমরা। শুধু গা-ছাড়া মনোভাবের জন্য পুজো হবে না এটা মেনে নিতে পারিনি।’’ দাদা-দিদিরা ছিল বলেই পুজোর আনন্দ করা সম্ভব হয়েছে জানে পড়ুয়ারাও। প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া রৌনক প্রামাণিকের কথায়, ‘‘সিমরান এবং হাসনাতদা না থাকলে এই বছর সত্যিই পুজো হত না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy