—প্রতীকী চিত্র।
মঙ্গলবারই বিয়ে। সেই দিনই বাড়িতে ঢুকতেই হতবাক সাগরদিঘি ব্লকের বিডিও সঞ্জয় শিকদার। প্রায় জনমানুষ শূন্য বাড়ির উঠোনে খেলা করছে জনা তিনেক শিশু। তাদের জিজ্ঞেস করতেই তারা জানিয়ে দিল, কোনও বিয়ে নেই আজ বাড়িতে। ঘরের মধ্যে ঘুমোচ্ছেন পাত্রীর মা। বছর খানেকের ছেলে কোলে উঠোনেই বসে আছেন পাত্রী। অথচ ব্লক অফিসে রূপশ্রী প্রকল্পে তাঁর বিয়ের জন্যই ২৫ হাজার টাকা চেয়ে আবেদন পত্র জমা দিয়েছিলেন তাঁরই বাবা।
বিডিও জানতে পারেন, এই দম্পতির বিয়ে হয়েছে প্রায় আড়াই বছর আগে, বছর দেড়েকের ছেলেকে নিয়ে পাত্রী বাড়ির উঠোনে বসে গল্প করছেন। রূপশ্রীর আবেদনের যাথার্থ্য দেখতে গিয়ে এমনই অভিজ্ঞতা সামনে এল বিডিওর।
বিডিও বলেন, ‘‘যে দম্পতির বিয়ে বলে রূপশ্রীর আবেদন করা হয়েছিল, তাঁদের আড়াই বছর আগেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। এ দিন সেই বিয়ের রেজিস্ট্রির দিন স্থির করা হয়েছিল। রেজিস্ট্রি করা উচিত, তা বিয়ের পরেও অনেকে করেন। ঠিকই করেন। কিন্তু আগের বিয়েটাও আইনসিদ্ধই। আইনে সেই বিয়েরও মান্যতা রয়েছে। তাই রূপশ্রী চাইতে গেলে আগের বিয়ের সময়ই চাওয়া উচিত ছিল। এত দিন পরে রেজিস্ট্রির সময় নয়।’’ তিনি জানান, বিয়ের খরচের জন্যই রূপশ্রী দেওয়া হয়। কিন্তু রেজিস্ট্রির ক্ষেত্রে এই দম্পতির তেমন কোনও খরচের উদ্যোগও দেখা যায়নি তাঁদের বাড়িতে। নিমন্ত্রিত এক জনকেও দেখা যায়নি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই গ্রামেরই কেউ এক জন এ দিন সকালে ফোনে সব কথা জানিয়েছিলেন। অভিযোগ পেয়ে আর দেরি করেননি বিডিও। সোজা তাঁর দুই কর্মীকে নিয়ে ওই বাড়িতে হাজির হন। গিয়ে বিডিও হতবাক। বিয়ের আসরের পরিচিত দৃশ্যের দেখা নেই।
বিডিওকে চিনতে পারেননি পাত্রী। তাই সত্যটাই বলে ফেলেন। বিডিও বলেন, “দম্পতির সামাজিক বিয়ে হয়েছে আড়াই বছর আগে। এ দিন ধরা পড়ে শেষ পর্যন্ত সত্যটা স্বীকার করেছেন বাবা মা। লিখিত ভাবে ক্ষমাও চেয়েছেন তাঁরা।”
২০২১ সালেও সুতি ও সাগরদিঘিতে রূপশ্রী প্রকল্পেও কয়েক কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছিল। বিডিও বলছেন, ২৫টি ভুয়া আবেদন তদন্তে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। কারও বাড়িতে বিয়ের বালাই নেই, কারও পাত্রীর বিয়ে হয়েছে দু’তিন বছর আগে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy