নির্বাচনী ইস্তাহারে বামেরা খোলসা করে দিয়েছিল— তৃণমূল এবং বিজেপি থেকে সমদূরত্বের নীতিতেই অবস্থান করছে তারা।
তবে, হালের পরিপ্রেক্ষিতে ইস্তাহারের অনুশাসন যে সর্বত্র নিম্নমুখী, এমনটা দাবি করবেন না ঘোর বাম সমর্থকও। দলের নিচুতলায় তাই ঘাস এবং পদ্মের সঙ্গে বামেদের সমঝোতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও তা যে একেবারে অসম্ভব তা মনে হচ্ছে না।
নদিয়া জেলায় বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবিষ্যত ঝুলে রয়েছে বামেদের সঙ্গে বিজেপি কিংবা তৃণমূলের বোঝাপড়ার সুতোয়। তারা যে দিকে সমর্থন দেবে বোর্ড ঢলে পড়বে সে দিকেই।
সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদক সুমিত দে অবশ্য এখনও জোর গলায় দাবি করে আসছেন, “কোন অবস্থাতেই আমরা বিজেপি ও তৃণমূলকে সমর্থন করব না।” কিন্তু, বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতে দলের নিচুতলার কর্মীরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, মানুষের সার্বিক ‘কল্যাণের’ স্বার্থে কাউকে না কাউকে সমর্থন করতেই হবে। না হলে?
জয়ী এক বাম প্রার্থী কোনও রাখঢাক না রেখেই বলছেন, ‘‘অনুমতি না দিলে দল ছেড়ে হয় তৃণমূল না হয় বিজেপিতে যোগ দেব, এ ছাড়া আর উপায় কি!’’
তেহট্ট-২ ব্লকের গোপীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ৭টি, বিজেপি ৬টি, একটি গিয়েছে বামেদের দখলে। পঞ্চায়েতের ভবিষ্যত? স্পষ্ট নয়।
গোটা নদিয়া জেলায় এমন পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৯টি। বীরপুর-২, ধর্মদা, রুইপুকুর, দেবগ্রাম, মার্টিয়ারি, চাঁদেরঘাট, পলাশিপাড়া, হোগলবেড়িয়া ও গোপীনাথপুর।
তেহট্ট-২ চাঁদেরঘাট পঞ্চায়েতের মোট আসন ১৩। বিজেপি ৬টি, তৃণমূল ৬টি আর সিপিএম একটি। রুইপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৭টি, বিজেপি ৭টি ও বামেরা ৩টি। পলাশিপাড়া পঞ্চায়েতে ১৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৯, বিজেপি ৫ ও সিপিএমের ৪টি আসন। দেবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ১৪, বিজেপি ১৩ আর বামেরা একটি। অর্থাৎ যে দল সিপিএমের মন জয় করতে পারবে বোর্ড গড়বে সেই!
বামেদের জায়গায় কোথাও বোর্ডের ভবিষ্যত কোথাও কংগ্রেসের মুখাপেক্ষী। মুর্শিদাবাদের সাটুই-চৌরিগাছা গ্রাম পঞ্চায়েত তাদেরই একটি। সেখানে প্রয়োজনিয় একটি আসনের মুখে এসে থমকে গিয়েছে বিজেপি।
মুর্শিদাবাদ জেলা বিজেপির সভাপতি গৌরিশঙ্কর ঘোষ অবশ্য বলছেন, “কেউ না কেউ ঠিক সমর্থন দেবে, দেখবেন।’’ প্রশ্নটা এড়িয়ে গিয়েছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাসও। বলছেন, “বোর্ড গঠনের এখনও অনেক সময় আছে। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’’
বহরমপুর ব্লকের সাটুই চৌরিগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১৮ টি আসন। সেখানে তৃণমূলের দখলে ৬টি, বিজেপি ৯টি, কংগ্রেস ২টি এবং নির্দল একটি আসনে জয়ী হয়েছে। ফলে বিজেপির বিরুদ্ধে বাকি তিনটি দল এক হলেও তাঁরা বোর্ড গঠনের ম্যাজিক সংখ্যায় পৌছবেনা। তা হলে বোর্ড গড়বে কে?
উত্তর থমকে রয়েছে সেই প্রশ্নের সামনে, নীতি না সমঝোতা জয়ী হবে কে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy