প্রতীকী ছবি।
সকালের নরম আলোয় বাজির প্যাকেটগুলো অত্যন্ত যত্ন করে মেলে রেখেছিলেন মুদির দোকানি। করিমপুর এলাকায় মুরুটিয়া থানার প্রত্যন্ত গ্রাম দাঁড়েরমাঠ। দোকানি সম্ভবত আঁচ করতে পারেন নি যে এখানেও চলে আসতে পারে পুলিশ। হাতেনাতে গ্রেফতার।
শুধু মুরুটিয়া থানা নয়, নদিয়ার কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলায় অনেক জায়গাতেই কমবেশি বাজি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ধরপাকড়ও চলেছে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত নদিয়া জেলায় ১৬ জন গ্রেফতার হয়েছে। ৭৬০ প্যাকেট বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে রানাঘাট পুলিশ জেলায় সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও গ্রেফতারি বা বাজি বাজেয়াপ্ত করার খবর নেই। অথচ কল্যাণীতে বেশ কিছু দোকান থেকে প্রকাশ্যেই বাজি বিক্রি হচ্ছে। চাকদহ, গাংনাপুর এবং রানাঘাটের কিছু দোকান থেকেও লুকিয়ে-চুরিয়ে বাজি বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ। তবে রানাঘাটের পুলিশ জেলার সুপার ভিআরএস অনন্তনাগ অবশ্য বলছেন, “কোথাও কোনও বাজি বিক্রি হচ্ছে বলে কেউ অভিযোগ করেনি।”
জেলার পুলিশ কর্তাদের দাবি, হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়িত করতে তাঁরা সমস্ত রকম পদক্ষেপ করছেন। এক দিকে যেমন মানুষকে সচেতন করতে নানা ভাবে প্রচার করা হচ্ছে, তেমনই আইনি পদক্ষেপও করা হচ্ছে। কড়া নজরদারির মধ্যেও গোপনে বাজি বিক্রির চেষ্টা রুখতে পুলিশি অভিযান চলছে। অনেক সময়ে এলাকার মানুষ বা স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির কাছ থেকে পুলিশ খবর পাচ্ছে। পুলিশের মতে, এটা সচেতনতার বড় চিহ্ন। সাদারণ নাগরিকেরা যত সক্রিয় হবেন, চোরাগোপ্তা বাজি বেচাকেনা কমবে।
আগেই বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ী সমিতিগুলির সঙ্গে বৈঠক করে বাজি বিক্রি নিয়ে কড়া অবস্থানের কথা জানিয়েছে পুলিশ। বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় থানার নম্বর দিয়ে ফ্লেক্স টাঙানো হয়েছে। ব্যবসায়ী সমিতিগুলির পক্ষ থেকেও নানা জায়গায় মাইক প্রচার হয়েছে। তবে এর পরেও বাজি বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। চাকদহ বাজার এলাকায় এক ব্যবসায়ী লুকিয়ে বাজি বিক্রি করছেন বলে স্থানীয় সূত্রের অভিযোগ। সেই দোকানি অবশ্য দাবি করেন, “হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার পর আমি আর বাজি কিনেও আনিনি, বিক্রিও করছি না। দুর্গাপুজোর সময়ে কিছু বাজি এনে বিক্রি করেছিলাম। তার কিছু থেকে গেলেও বিক্রি করছি না। রেখে দিয়েছি।”
আজ শনিবার, কালীপুজোর সন্ধ্যায় বাজি পোড়ানো কি সত্যিই বন্ধ করা সম্ভব হবে? ইতিউতি পাড়ার ভিতরে, বাড়ির ছাদে বা উঠোনে কেউ যদি বাজি পোড়ায়, পুলিশ কী করবে? পুলিশের দাবি, নির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনা আছে তাদের। রাতে মোটরবাইকে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরবেন পুলিশকর্মীরা। থাকবে একাধিক টহলদার গাড়িও। প্রতিটি এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ারেরা নজর রাখবেন কোন বাড়িতে বাজি পোড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরসভার সদস্য ও প্রাক্তন সদস্যদের অনুরোধ করা হয়েছে, এলাকায় কেউ বাজি পোড়ালে গোপনে পুলিশকে খবর দিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy