Advertisement
০৭ মে ২০২৪

প্লেটলেট মিলবে জেলাতেই

নদিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, “গত বছর এই নির্দেশিকা দেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ও যন্ত্রপাতি না থাকার কারণে তা বাস্তবায়িত করা যায়নি। এবারও নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩৬
Share: Save:

মাসখানেক আগে জেলা হাসপাতালগুলির হাল ছিল নিধিরাম সর্দারের মতো। অন্তত ডেঙ্গির বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষেত্রে। প্লেটলেট নীচে নামলেই রোগীকে পাঠাতে হত কলকাতার হাসপাতালে। প্লেটলেট দূরের কথা, জেলার হাসপাতালগুলিতে রক্তের উপাদান পৃথকীকরণের ব্যবস্থাই নেই। তারই মধ্যে এ বছর মধ্যে কল্যাণীর মেডিক্যাল সেই ব্যবস্থা চালু হওয়ায় কিছুটা সুরাহা হয়েছে।

নদিয়া-মুর্শিদাবাদের আর কোনও হাসপাতালেই এই ব্যবস্থা নেই। এ বার সেই সমস্যা মিটতে চলেছে। শুধুমাত্র প্লেটলেটের জন্য এ বার আর কলকাতার হাসপাতালে যেতে হবে না। কারণ, জেলার হাসপাতালে মজুত রাখা হবে প্লেটলেট-সহ রক্তের অন্যান্য উপাদান।

তবে উদ্যোগটা নেওয়া হয়েছিল গত বছরই। স্বাস্থ্য দফতর নির্দেশও জারি করে। কিন্তু, তখন পরিকাঠামো না থাকায়, সে ব্যবস্থা চালু করা যায়নি। পরিকাঠামো গড়ে এ বার সেই কাজ শুরু হল। প্লেটলেটের পাশাপাশি লোহিত কনিকাও মজুত রাখতে শুরু করেছে জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল। ফলে এ বার থেকে ডেঙ্গি রোগীর রক্তে প্লেটলেট কমলে রোগীরা তা জেলাতেই পেয়ে যাবেন। প্লেটলেট পেতে যাতে অসুবিধা না হয়, সেই জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ডেঙ্গি রোগীদের কলকাতার হাসপাতালে পাঠানোর ফলে সেখানেও ওয়ার্ডে ঠাঁই নেই ঠাঁই নেই অবস্থা দাঁড়ায়। হয়রানির শিকার হতে হয় রোগী এবং পরিবারের লোকেদেরও।

ডেঙ্গির আক্রান্ত রোগীদের যাতে জেলা হাসপাতালেই প্লেটলেট দেওয়া যায়, তার জন্য উদ্যোগী হয় স্বাস্থ্য ভবন। কলকাতা-সহ জেলার যে সব মেডিক্যাল কলেজে ‘ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন ইউনিট’ রয়েছে, সেখান থেকে প্লেটলেট সংগ্রহ করে নিয়ে এসে রোগীদের দেওয়ার ব্যবস্থা করার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকায় একেবারে হাসপাতালও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, কোন কোন হাসপাতাল কোথা থেকে প্লেটলেট ও রক্তের অন্য উপাদান সংগ্রহ করবে। কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের জন্য কলকাতার সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্ক। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের কথা বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।

নদিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, “গত বছর এই নির্দেশিকা দেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ও যন্ত্রপাতি না থাকার কারণে তা বাস্তবায়িত করা যায়নি। এবারও নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। সেই মতো পদক্ষেপ শুরু করেছি।” পরিকাঠামো তৈরি হওয়ায় জেলার বহু হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে প্লেটলেট সংগ্রহ ও মজুত করে তা ব্যবহারও করতে শুরু করে দিয়েছে। শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল এরই মধ্যে দু’বার ২০ ইউনিট প্লেটলেট নিয়ে এসেছে। ব্যবহার হয়েছে পাঁচ ইউনিট। ৪২ ইউনিট লোহিত রক্ত কণিকা নিয়ে এসে মজুত করে তারা প্রয়োজন মত থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য ব্যবহার করতে শুরু করেছেন।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের ডেপুটি সুপার প্রভাস চন্দ্র মৃধা বলেছেন, “আমাদের এত দিন প্লেটলেট দরকার হয়নি। তা ছাড়া পরিকাঠামো তৈরি না থাকায় প্লেটলেট নিয়ে আসিনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Blood Platelet Dengue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE