Advertisement
১৬ মে ২০২৪
TMC

সাংসদ ‘অসুস্থ’, বিধায়কেরা অন্য অনুষ্ঠানে! বিজয়া সম্মিলনীতেই প্রকট তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব

নেতা-বিধায়কদের গরহাজিরার তালিকা দীর্ঘ। এই অনুপস্থিতি ঘিরে শুরু হয়েছে গোষ্ঠীকোন্দলের জল্পনা। যদিও তাতে গুরুত্ব দিতে নারাজ জেলা সভাপতি শাওনি সিংহ রায়।

TMC

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৩ ১১:৩৫
Share: Save:

দলের জেলা সভাপতির সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা গেল না জেলা চেয়ারম্যানকে। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অনুপস্থিত জেলার সাংসদও। গরহাজির একাধিক বিধায়ক। এমনই ছবি দেখা গেল মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতির ডাকা বিজয়া সম্মিলনীতে। জেলা তৃণমূলের একাংশের অনুপস্থিতি নেহাতি ‘অজুহাত’ ছাড়া আর কিছু নয় বলে দাবি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুর্শিদাবাদ জেলা সাংগঠনিক তৃণমূলের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতার। তবে অন্যদের মতো রাখঢাক না রেখেই ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবিরের মন্তব্য, ‘‘ওকে সভাপতিই মানি না!’’ বস্তুত, মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা সভাপতির ডাকা বিজয়া সম্মিলনী ঘিরে অনৈক্যের ছবি স্পষ্ট হতেই তৃণমূল নেতৃত্বের কপালে চিন্তার ভাঁজ। জেলা সভাপতি অবশ্য বলছেন, তাঁরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।

তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ ছিল, রাজ্যের প্রতিটি ব্লক এবং শহরে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করতে হবে নেতাদের। বিধানসভা ক্ষেত্রে বিধায়ক এবং ব্লকের জন্য ব্লক সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি সমস্ত ব্লক এবং অঞ্চল নেতৃত্বকে অংশ নিতে হবে। শহরের ক্ষেত্রে টাউন সভাপতি এবং ওয়ার্ড প্রেসিডেন্টদের অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। সেই মতো মুর্শিদাবাদ বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে মোট ২৭টি বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। নওদা এবং ভরতপুরে ওই দুই অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন এলাকার বিধায়ক শাহিনা মমতাজ ও হুমায়ুন কবির।

শনিবার ছিল বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার বিজয়া সম্মিলনী। তাতে ছিলেন সাংগঠনিক বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি শাওনি সিংহ রায়, রাজ্য সহ-সভাপতি মইনুল হাসান, বেলডাঙার বিধায়ক হাসানুজ্জামান, রানিনগরের বিধায়ক সৌমিক হোসেন, ভগবানগোলার বিধায়ক ইদ্রিস আলি, বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়রা। কিন্তু, ওই পর্যন্তই। তার পর গরহাজিরার তালিকা দীর্ঘ। এই অনুপস্থিতি ঘিরে শুরু হয়েছে গোষ্ঠীকোন্দলের জল্পনা। যদিও তাতে গুরুত্ব দিতে নারাজ জেলা সভাপতি।

জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, জেলা সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায়ের ডাকা বিজয়া সম্মিলনী থেকে নিজেকে থেকে দূরেই রেখেছেন কান্দি বিধানসভার বিধায়ক তথা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকার ওরফে ডেভিড। তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে নওদার বিধায়ক শাহিনা মমতাজের গলায় অভিযোগের সুর। তিনি বলেন, ‘‘সকালে সভানেত্রী ফোন করলেও এক বারও জেলা কার্যালয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বলেননি।’’ দলের জেলা সভানেত্রীর অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকলেও শাহিনাকে শনিবার রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরীর আয়োজন করা বিজয়া সম্মিলনীতে দেখা গিয়েছে।

দলের বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে দেখা যায়নি জলঙ্গির বিধায়ক আব্দুর রজ্জাক, হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখকেও। শারীরিক অসুস্থতা কাটিয়েছেন। কিন্তু সম্মিলনীতে যাননি সাংসদ তথা দলের চেয়ারম্যান আবু তাহের খানও। এ নিয়ে কেউই তেমন কিছু বলতে চাইছেন না। বলছেন শুধু হুমায়ুন। তাঁর কথায়, ‘‘জেলা সভাপতির আমার সম্পর্ক ভাল না। তাই আমি যাইনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি বদলের জন্য রাজ‍্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি। দেখা যাক, কী হয়। আর থাকলেও আমি ওকে মানি না।’’

বিধায়কদের অনুপস্থিতি মানেই যে দলীয় কোন্দল তা মানতে নারাজ শাওনি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে যৌথভাবে লড়াই করেছি। জেলা জুড়ে এই অবাধ সাফল্য অভ্যন্তরীণ বোঝাপড়া ঠিক না থাকলে হত না।’’ মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকারের বক্তব্য আবার আলাদা। তাঁর কথায়, ‘‘বিজয়া সম্মিলনী নিয়ে আমার সঙ্গে কোনও আলোচনা করেননি জেলা সভানেত্রী। তাই যাওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Murshidabad Murshidabad TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE