Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
Murshidabad

উন্নয়ন-যুদ্ধে অধীর বনাম রবিউল, এক রাস্তার দু’বার শিলান্যাস কংগ্রেস সাংসদ এবং তৃণমূল বিধায়কের!

মুর্শিদাবাদের একটি রাস্তা তৈরির লড়াইয়ে বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী এবং তৃণমূল বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী। দুই জনপ্রতিনিধি একই রাস্তা তৈরি করার জন্য শিলান্যাস করেছেন।

Adhir Chowdhury and Rabiul Islam

(বাঁ দিক থেকে) একই রাস্তার শিলান্যাসে অধীর চৌধুরী এবং রবিউল আলম চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:১৬
Share: Save:

এক রাস্তা। সাংসদ বলছেন, তিনি তৈরি করবেন। বিধায়কের দাবি রাস্তা গড়বেন তিনি। সাংসদ বনাম বিধায়কের এই উন্নয়ন-যুদ্ধে শোরগোল মুর্শিদাবাদের মরাদিঘি অঞ্চলে। একই রাস্তা তৈরির জন্য শিলান্যাস করলেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী এবং রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী।

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা-২ ব্লকের দাদপুর পঞ্চায়েতের ৬৩৫ মিটার দীর্ঘ একটি রাস্তার দাবি ছিল দীর্ঘ দিনের। মরাদিঘি থেকে অমরপুর পর্যন্ত ওই রাস্তাটি তৈরি করবেন বলে শিলান্যাস করেন সাংসদ অধীর। তিনি জানান, রাস্তাটি তৈরি করতে চার লক্ষ টাকা খরচ হবে। সাংসদ তহবিল থেকে সেই টাকা দেবেন তিনি। কিন্তু রবিবার ওই একই রাস্তা রাজ্য সরকারের ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের অধীনে তৈরি হবে বলে শিলান্যাস করে ফেলেছেন রেজিনগরের তৃণমূল বিধায়ক রবিউল। পাশাপাশি, অধীরকে অন্য রাস্তা তৈরির মৌখিক প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তৃণমূল বিধায়কের কথায়, ‘‘মরাদিঘি ও অমরপুরের বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তার অনুমোদন করাই। দু-চার দিনের মধ্যেই এই কাজ শুরু হয়ে যাবে।” এই রাস্তা তৈরি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে তাঁর আলোচনাও হয়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি। রবিউলের সংযোজন, ‘‘সাংসদকে (অধীর) বলতে চাই, আপনার তহবিল থেকে গ্রামের অন্য একটি রাস্তা তৈরি করে দিন। তাহলে গ্রামের উন্নয়ন হবে।” কিন্তু সোমবার আবার ওই রাস্তার শিলান্যাস করতে যান অধীর। তখন গ্রামবাসীদের কয়েক জনও রবিউলের ‘পরামর্শের কথা’ অধীরের কানে তোলেন। কিন্তু কংগ্রেস সাংসদ ওই রাস্তা করবেনই। তিনি বলেন, ‘‘আমি সরকারের অনুমতিতে এই কাজ করছি। সরকার আমার কাজটা বাতিল করে দিক তবে।” শেষ পর্যন্ত ফিতে কেটে ওই রাস্তার শিলান্যাসও করেন অধীর।

একই রাস্তা তৈরি নিয়ে কেন এই ‘যুদ্ধ’? অধীরের কথায়, ‘‘বিধায়কের সঙ্গে আমি তো যুদ্ধে যেতে পারি না। এক সঙ্গে বসলে সমস্যা মিটে যাবে। তবে ওই রাস্তাটা আমিই করব।” অন্য দিকে, সাংসদ ও বিধায়কের এই উন্নয়ন-যুদ্ধ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন স্থানীয়রা। মজা করে কেউ বলছেন, ‘‘এই তো চাই। কাজ করার জন্য লড়াই হোক।’’ অনেকের আবার ভয়, দলাদলিতে শেষ পর্যন্ত রাস্তার কাজটা যেন না মাটি হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা মেহে আলম মণ্ডল যেমন বলছেন, ‘‘ভোট আসছে বলে উন্নয়নের মারামারি। ভোটের সময় ছাড়া তো নেতাদের দেখা পাওয়া ভার। এর মধ্যে রাস্তাটা হলেই আমাদের মঙ্গল।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE