রুবিয়া সুলতানা। —ফাইল চিত্র।
গাড়ির জন্য কোনও মাসে ২২০৯ লিটার, কোনও মাসে ১৮১৫ লিটার বা ১৯১০ লিটার ডিজেল নিয়েছেন। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের বাজেট অধিবেশনে জেলা পরিষদের সভাধিপতির বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুললেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন সহকারী সভাধিপতি তথা তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য শাহনাজ বেগম। শুধু তাই নয়, সভাধিপতি নাকি কলকাতার নামী দামি হোটেলের মোটা টাকা খরচ মিটিয়েছেন জেলা পরিষদের তহবিল থেকে। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পরিষদের সভাগৃহে যখন শাহনাজ এমন মন্তব্য করছেন তখন মঞ্চে রয়েছে সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা, জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র, মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহেরের মতো অনেকেই। শাসক দলের জেলা পরিষদ সদস্যর সভাধিপতির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ঘিরে হইচই শুরু হয়েছে দলের অন্দরে। জেলা প্রশাসনিক মহলে লোকসভা নির্বাচনের মুখে সভাধিপতির বিরুদ্ধে দলেরই জেলা পরিষদ সদস্য প্রশ্ন তোলায় হইচই শুরু হয়েছে।
তবে সভাধিপতি রুবিয়া বলেন, ‘‘কোনও সদস্যর আক্ষেপ থাকতে পারে। কেউ যখন অভিযোগ করছে, সেটা কতটা যুক্তি সঙ্গত সেটাও দেখার বিষয় রয়েছে। সত্যতা কতটা সেটার একটা ব্যাপার থাকে। দায়িত্ব পাওয়া মানে পক্ষে যেমন কথা পাব, তেমনই বিপক্ষেও কথা পাব। এটা আমাদের জন্য সাধারণ।’’ অভিযোগ কী মিথ্যা? রুবিয়ার জবাব, ‘‘সে সব নিয়ে আমাকে (বৈঠকে) বসতে হবে। এসব বিষয় নিয়ে গুরুত্ব দিই না। আপনাদের বিষয়টি যাচাই করা উচিত।’’ বৈঠকের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে জেলা প্রশাসনের কর্তারা এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে জেলা পরিষদের তৃণমূলের সদস্য শাহনাজ বেগম বলেন, ‘‘যা বলার বৈঠকে বলেছি। এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে কিছু বলব না।’’ তবে জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, ‘‘অভিযোগকারী সভাধিপতি হতে পারেননি। তাই সেই রাগঝাল মেটাতে এ সব অভিযোগ তুলছেন।’’
জেলা যুব কংগ্রেসের সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য তৌহিদুর রহমান সুমন বলেন, ‘‘শাসক দলের জেলা পরিষদ সদস্য যে অভিযোগ এ দিনের বৈঠকে তুলেছেন, তা যদি সত্যি হয় তা হলে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে। আমরা চাই অভিযোগের তদন্ত করে সত্য সামনে আনা হোক।’’
এদিন দুপুরে জেলা পরিষদের চূড়ান্ত বাজেট বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে জেলা পরিষদ সদস্য শাহনাজ বেগম বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় শোনা যাচ্ছে জেলা পরিষদের সভাধিপতি অক্টোবর মাসে ২২০৯ লিটার, নভেম্বর মাস ১৮১৫ লিটার এবং ডিসেম্বর মাসে ১৯১০ লিটার ডিজেল তুলেছেন। আমরাও জেলা পরিষদ আগে চালিয়েছে। সভাধিপতির এই বিপুল পরিমাণ ডিজেল লাগার কথা নয়। আবার ২১ অক্টোবর ৬৬৮২০ টাকা, ১৭ নভেম্বর ৫৩৩২০ টাকা এবং ২৬ ডিসেম্বর ৩৫৮৪০ টাকা কলকাতার হোটেলে খরচ করেছেন। অথচ সরকারি লোকেদের কম টাকায় সেখানে সার্কিট হাউসে থাকা যায়। আমরা জানতে চাই এটি ঠিক না বেঠিক। এটি বেঠিক হলে আমি খুব খুশি হব। কারণ আমিও জেলা পরিষদের অঙ্গ।’’ শাহনাজ বৈঠক বলেছেন, ‘‘অনেক জেলা পরিষদ সদস্য ঠিকাদারের কাজ করেন। যে ব্লক থেকে জেলা পরিষদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সেই ব্লকে যেন তিনি ঠিকাদারি না করেন।’’
সেই সঙ্গে সব জেলা পরিষদ সদস্যের এলাকায় সমান কাজ হয় না বলেও অভিযোগ তুলে সকলের এলাকায় সমান কাজ দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy