কুয়াশা ঢাকা সকালে। বুধবার, কৃষ্ণনগরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
সকাল ছ’টা নাগাদ। পাড়ার চায়ের দোকানগুলো সবে উনুন ধরিয়েছে। আস্তে আস্তে ক্রেতারা এসে ভাঁড়ে গরম চা চেয়ে নিচ্ছেন শীতের সকালে। যত না ঠান্তা, তার চেয়ে বেশি কুয়াশায় ঢেকে গিয়েছে চারপাশ।
এর মধ্যেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে চাকদহ রেল স্টেশনের দিকে হেঁটে আসছিলেন বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তি। কুয়াশার কারণে আশপাশের কিছু দেখা যাচ্ছিল না। বুঝতে না পেরে উল্টো দিক থেকে আসা এক সাইকেল চালক তাঁকে ধাক্কা মেরে বসেন। আচমকা ধাক্কা খেয়ে রাস্তার মধ্যে হুমড়ি খেয়ে উল্টে পড়েন তিনি। যদিও আঘাত গুরুতর নয়। নিজের মধ্যে ঝামেলা বেঁধে যায়। তার পর দু’জনেই নিজের নিজের গন্তব্যের দিকে রওনা হন। কুয়াশার মধ্যে ফের চোখের আড়ালে চলে যান দু’জনেই।
বাজারে চায়ের দোকানে বসে এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ভবতোষ মিত্র। আরও অনেকের মতোই তিনি সকালের বাজার সারতে এসেছেন শীতের সকালে। কুয়াশায় দু’ফুট দূরের কিছু দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না তখনও। বললেন, ‘‘ব্যস্ত রাস্তায় এমন কুয়াশায় দুর্ঘটনা আরও বাড়ে। ভয়ই লাগছে, উল্টো দিক থেকে না জানি কখন গাড়ি এসে ধাক্কা মারবে!’’
এ দিন বেলা গড়ানোর পরেও বহু ক্ষণ কুয়াশার আস্তর ছিল। রোদও সে ভাবে উঠেনি। ঠান্তার পারদ ঠিক অন্য দিনের মতোই মাঝারি।
প্রতি দিন সকালে শান্তিপুর থেকে ফুল নিয়ে চাকদহের শিমুরালি বাজারে বিক্রি করতে আসেন নারায়ণ দাস। বুধবার সকালে ডাউন শান্তিপুর লোকাল ধরে শিমুরালি এসেছেন। নারায়ণ বলেন, “ভোরে এত কুয়াশা হয়েছিল যে, সামনের কোনও জিনিস দেখা যাচ্ছিল না। ট্রেনটা প্রায় আধঘণ্টা দেরিতে এসেছে। যে কারণে দোকান খুলতে দেরি হয়ে গিয়েছে।’’
তিনি জানাচ্ছেন, তিনি দোকান খুললেও কুয়াশার জন্য অনেক ক্রেতা সকালের দিকে আসেননি। বেলা গড়াতে দু’-এক জন করে আসতে শুরু করেন। তবে, অন্য দিন যে ভাবে ফুল বিক্রি হয়। এ দিন সে ভাবে বিক্রি হয়নি।”
রানাঘাট ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা পিন্টু সরকার বলেন, “এ দিন সকালে খুব কুয়াশা হয়েছিল। রাস্তা দিয়ে যানবাহন খুব আস্তে চলাচল করেছে। এর জন্য সকালের দিকে ব্যবসা জমেনি। বাজার জমতে সকাল আটটা পার হয়ে গিয়েছে। অনেকের ব্যবসা তাই অন্য দিনের মতো হয়নি।”
চাকদহ সেন্ট্রাল ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুবল দেবনাথ বলেন, “কুয়াশার জন্য ব্যবসা মার খাচ্ছে। ট্রেন দেরিতে চলাচল করছে। ভাগিরথী নদী পার হয়ে নদী পথে হুগলি জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা চাকদহে আসেন। তাঁরা ঠিকমতো আসতে পারছেন না।”
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কমল দেওদাস বলেন, “সকালের দিকে কুয়াশা হচ্ছে। তবে এ জন্য ট্রেন চলাচলে সে রকম কোনও সমস্যা হচ্ছে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy