ঝুলন্ত-বিস্কুট: এটা অবশ্য আর একটি প্রতিযোগিতা। ইদ উপলক্ষে চলছে বহরমপুর গোরাবাজারে। নিজস্ব চিত্র
ভিড় নেহাত কম ছিল না। প্রতিযোগিতার বিষয়ও তো কম নয়— নয়-নয় করেও ১৫টি। নাচ, গান, প্রদীপ জ্বালানো, ‘হ্যাপি পেরেন্টস’, ক্যুইজ, ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ থেকে ‘দাদাগিরি’ পর্যন্ত।
বহরমপুর শহরের বড়মুরির ধারে ইদ উপলক্ষে গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়েছে। শেষ হবে আগামী ১ জুলাই। সেই ‘মেগা ইভেন্ট’-এর জন্য প্রাথমিক ভাবে হাজারখানেক প্রতিযোগীর নাম জমা হয়েছিল। দিন সাতেকের ঝাড়াই-বাছাই শেষে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ডজন দুয়েকে।
প্রতিযোগীর ভিড় হবেই না বা কেন! এক যুগের ট্রাডিশন মেনে পুরস্কারের তালিকা যে তাক লাগানো! সোনা-রুপোর গয়না থেকে শুরু করে সাইকেল পর্যন্ত চিরাচরিত সবই তো আছে। যদিও সে সবের দিকে তেমন নজর নেই প্রতিযোগী থেকে দর্শক, কারও।
কারণ পুরস্কারের তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে পেল্লায় সাইজের কাঁঠাল, আমের ঝুড়ি, আড়াই কেজি ওজনের দু’টো রুই-কাতলা, কচি পাঁঠার মাংস ৫ কেজি, বিরিয়ানি রান্নার চাল, ফুলকো লুচির জন্য ময়দার বস্তা। এ ছাড়া ডাল, আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, লঙ্কা, চিনি, গুড়, সর্ষের তেল, ঘি, দারুচিনি, কিসমিস, কাজু, জয়িত্রি, জায়ফল, ক্যাওড়ার জল, লবঙ্গ, দারচিনি, জিরে, নুন, লাউ, বেগুন, পটল, পেল্লায় ওল— এক কথায় পুরস্কারের তালিকায় রয়েছে জিরে থেকে হিরে পর্যন্ত সব কিছু। পাজামা-পাঞ্জাবি, চুড়িদার, প্যান্ট, বারমুডা, জামা, জুতো, শাড়ি, আতর, সুরমা কিছুই বাদ নেই। আর কি চাই?
বহরমপুর শহরের খাগড়া বড় মসজিদ কমিটির সভাপতি তথা ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থা ‘সম্প্রীতি সংঘ’-এর সম্পাদক মহম্মদ বিরু শেখ বলেন, ‘‘ইদের খুশির উপলক্ষে ওই আনন্দ অনুষ্ঠানের শুরু হয়েছিল। বয়স এ বার নিয়ে ১২ বছর। এই প্রতিযোগিতায় সবাই অবাধে যোগ দিতে পারেন। বাধা কেবল একটিই। প্রতিযোগীকে অবশ্যই মাধ্যমিক পাশ হতে হবে।’’
সবুজ ঘাসে ঘেরা মাঠের এক প্রান্তে মঞ্চ। সেখানেই বাঁধা রয়েছে নধর পাঁঠা। যে দল জিতবে সেটা তাদের। কিন্তু সে তো ফুটবল মাঠে! এই অনুষ্ঠানের ভাবনায় টিভি গেম শো-র ছায়া স্পষ্ট। কিন্তু বহরমপুরে এমন প্রতিযোগিতায় পুরস্কারের এমন আজগুবি তালিকা কেন?
তাঁর জবাব, ‘‘এই সব পুরস্কার দেন খাগড়ার ব্যবসায়ীরা। টাকা নয়, তাঁদের দোকানের জিনিস নিই আমরা। তাতে নতুনত্ব আসে। দোকানদারেরাও খুশি হন। গত বারের দিদি নম্বর ওয়ান দু’টো টুকটুক বোঝাই করেও সব পুরস্কার নিয়ে যেতে পারেননি। এ বার কী হয়, দেখা যাক,’’ বলেন বিরু শেখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy