উদ্ধার হওয়া সোনার বাট। ধানতলা থানায়। —নিজস্ব চিত্র।
ভোরের আলো ফোটার আগেই কাজ হাসিলের কথা ছিল। বাদ সাধল পুলিশ। শুক্রবার ভোরে ধানতলার পাঁচবেড়িয়া মোড় এলাকায় একটি গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করতেই উদ্ধার হল প্রায় ১০ কিলোগ্রাম ওজনের সোনার বাট। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ছয় কোটি টাকারও বেশি বলে পুলিশের দাবি। অবৈধ ভাবে সোনা রাখা ও তা পাচারের জন্য চালক সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে ধৃতদের নাম অঙ্কিত বিশ্বাস, পলাশ দালাল ও বাবলু বিশ্বাস। তাদের বাড়ি কৃষ্ণগঞ্জ থানা এলাকায়। শুক্রবার ধৃতদের রানাঘাট আদালতে তোলা হলে বিচারক ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
শুক্রবার ভোর প্রায় পৌনে পাঁচটা। বগুলার দিক থেকে একটি গাড়িতে চেপে তিন যুবক রানাঘাটের দিকে আসছিল। ওই গাড়িতে যে বেআইনি কারবার হচ্ছে তেমন খবর আগে থেকেই ছিল পুলিশের কাছে। গাড়িটি পাঁচবেরিয়া মোড় এলাকায় আসতেই পথ আটকায় পুলিশ। শুরু হয় তল্লাশি। পুলিশ সূত্রে খবর, বানপুরের দিক থেকে রানাঘাটে নিয়ে আসা হচ্ছিল ওই সোনা। সোনা ছাড়াও গাড়িটি ও পাঁচটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সোনা পাচারের পিছনে ভিন্ জেলার বড়সড় চক্রের যোগ থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না তদন্তকারীরা। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে ওই সোনার বাটগুলি রাতের অন্ধকারে সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে পাচার করা হয়েছিল। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতরা জানিয়েছে আটক করা গাড়িটি হুগলি জেলার। যদিও পরিবহণ দফতরের নথিতে পূর্ব বর্ধমানের গাড়ি বলে উল্লেখ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর মাসে রানাঘাটে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিয়ে ছিল ডিরেক্টর অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স-এর সদস্যরা। অবৈধ ভাবে সোনার বিস্কুট রাখার অপরাধে সেইসময় একজনকে গ্রেফতারও করা হয়। মাঝে মধ্যেই অবৈধ ভাবে সোনা রাখা বা ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে রানাঘাটে। এ দিনের ঘটনাতেও সোনার বাটগুলি রানাঘাটে নিয়ে আসা হচ্ছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে অভিযুক্তরা। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী নদিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঝেমধ্যেই সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছে চোরাকারবারিরা। উদ্ধার হচ্ছে কখনও সোনার বিস্কুট, কখনও আবার নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ, পাখি ইত্যাদি। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি সোনা কারবারের জন্য জেলার সীমান্তকে নিরাপদ করিডর হিসেবে বেছে নিয়েছে পাচারকারীরা? সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় কোনও তদন্তকারী সংস্থা হোক কিংবা রাজ্য পুলিশ, সাম্প্রতিক কালে ১০ কিলোগ্রাম ওজনের সোনার বাট উদ্ধারের ঘটনা নজরে আসেনি। বিষয়টি নিয়ে ধানতলা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক দীনেশচন্দ্র পাল বলেন, "ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এই চক্রে আর কে বা কারা যুক্ত রয়েছে, জানার চেষ্টা চলছে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy