ভাগীরথীর বুকে জেগে ওঠা চর ঘিরে পর্যটন সম্ভাবনা। — নিজস্ব চিত্র।
নদীপারের চিকচিকে বালি। সঙ্গে জলের ছলাৎ ছলাৎ। মৃদুমন্দ উত্তুরে হাওয়া, উপরি হিসাবে একটানা ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক— এমন আগলখোলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে রাত কাটাবেন? এ বার সেই ব্যবস্থা করছে নদিয়া জেলা পর্যটন দফতর। রানাঘাট দিয়ে বয়ে গিয়েছে ভাগীরথী। বিপুলা ভাগীরথীর বুকে জেগে উঠেছে বিরাট এক ব-দ্বীপ। সেখানেই ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হচ্ছে নিশিযাপনের কটেজ। পাশাপাশি থাকছে মাঝারি মাপের কমিউনিটি হল, পিকনিকের জায়গা, পরিশ্রুত পানীয় জল, পর্যটকদের থাকা খাওয়ার সুবন্দোবস্ত। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে আলোকমালায় সাজিয়ে তোলা হচ্ছে গোটা ব-দ্বীপ। নাম দেওয়া হয়েছে ‘মঙ্গলদ্বীপ’।
দ্বীপটির মোট আয়তন প্রায় ৭৫০ বিঘা। যার মধ্যে ৩০ বিঘা এলাকা জুড়ে এই পর্যটন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বাকি অংশের মধ্যে ৩০০ বিঘায় অভয়ারণ্য-সহ একাধিক প্রকল্প গড়ে তোলার ভাবনাও রয়েছে পর্যটন দফতরের। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, রানাঘাটে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে ঢেলে সাজানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে কথা মাথায় রেখে মঙ্গলদ্বীপে রানাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে ইতিমধ্যেই পর্যটন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ভাগীরথীর প্রবাহ পথে পায়রাডাঙার কাছে গজিয়ে ওঠা এই ব-দ্বীপের রক্ষণাবেক্ষণের ভার পাকাপাকি ভাবে নদিয়া জেলা প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছে জেলা পর্যটন দফতর। ভূমি উন্নয়ন থেকে শুরু করে সবুজায়নের কাজ আগেই শুরু করেছিল প্রশাসন। এ বার কার্যত সেজেগুজে তৈরি মঙ্গলদ্বীপ।
জেলা পর্যটন দফতরের ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কটেজ বুকিং করা যাবে। পর্যটকদের মূল ভূখণ্ড থেকে ব-দ্বীপে আনার জন্য থাকবে চারটি বিশেষ ভাবে সজ্জিত নৌকা। চর্বচোষ্য খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থার ভার দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের হাতে। স্থানীয় মাঝিদের যুক্ত করে ব্যবস্থা থাকছে অবসরে নৌকা বিহারেরও। সব মিলিয়ে মঙ্গলদ্বীপকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর কর্মসংস্থানের এক মস্ত সম্ভাবনা দেখছে প্রশাসন। আর তাতে ভর করে আশায় বুক বাঁধছেন স্থানীয়েরা।
ভাগীরথীর বুকে জেগে ওঠা দ্বীপে রাত্রী যাপনের অনন্য অভিজ্ঞতা পেতে আগামী পর্যটন মরসুম থেকেই পর্যটকদের ঢল নামবে বলে আশাবাদী প্রশাসন। রানাঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে পর্যটন কাঠামো ঢেলে সাজার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাঁর কথাকে পাথেয় করেই আমরা মঙ্গলদীপকে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করি। সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি ব্যাপক কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে মঙ্গলদ্বীপকে ঘিরে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy