রঘুনাথগঞ্জের আহত তৃণমূল নেতা ইশারুল শেখকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে । ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
সহায়তা কেন্দ্র করা নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষে রবিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত রইল সেকেন্দ্রার লালখান্দিয়ার গ্রাম। স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার দখল ঘিরে সেকেন্দ্রায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি এবং পঞ্চায়েত প্রধানের অনুগামীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ। এতে দু’পক্ষের দু’জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির কার্যকরী সভাপতি ইশারুল শেখকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাঠানো হয়েছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আহত আরেক জনের নাম সাইফু শেখ। ঘটনার পর থেকে থমথমে এলাকা। জঙ্গিপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (এসডিপিও) প্রবীর মণ্ডলের নেতৃত্বে পুলিশের বিশাল বাহিনী এলাকায় টহল দিচ্ছে। এ পর্যন্ত দু’পক্ষের ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি পুলিশের।
সেকেন্দ্রোর এই এলাকা রাজ্যের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামানের বিধানসভার মধ্যে পড়ে। সীমান্ত লাগোয়া পদ্মাপাড়ের এই গ্রামে শাসক দলের গোষ্ঠী বিবাদ নতুন নয়। বাম আমলেও হয়েছে। প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায় জঙ্গিপুরের সাংসদ হলে ওই গ্রামে কংগ্রেসের প্রতিপত্তি ছিল। এখন তৃণমূলের দাপট সেখানে। গ্রামে কাদের দখলদারি থাকবে, তা নিয়ে তৃণমূল নেতা ইলিয়াস চৌধুরী এবং তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মোতাহার হোসেনের অনুগামীদের দ্বন্দ্ব রয়েছে। গোলমালে মুড়ি-মুড়কির মতো বোমাবাজিও হয়েছে অতীতে। আতঙ্কে গ্রামছাড়া বহু মানুষ। মোতাহারের অভিযোগ, “ইমামনগর মোড়ে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে দলের সহায়তা কেন্দ্রে পরিষেবা দেওয়া চলছে কার্যকরী সভাপতি ইশারুল শেখের নেতৃত্বে। রবিবার পরিষেবা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। কেউ যাতে বাদ না পড়েন, সে জন্য বাড়ি বাড়ি খবর দিতে যাচ্ছিলেন তাঁর অনুগামীরা। সেই সময় তাঁদের উপর একদল দুষ্কৃতী ছেনি, লাঠি নিয়ে চড়াও হয়। ইশারুলের আঙুল কেটে নেওয়া হয়েছে। তাঁর মাথা ফেটে গিয়েছে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে হাত।’’ অন্যদিকে, সেকেন্দ্রা পঞ্চায়েতের প্রধান পরভিন খাতুনের স্বামী হায়কুল শেখের দাবি, “আমি বাড়িতেই ছিলাম। শুনলাম দলের কর্মী সাইফু শেখ-সহ দু’জন জামাল কোটার কিছু গাছ কেটে পাঠাচ্ছিল জমিতে বেড়া দেওয়ার জন্য। ইশা-সহ তিন জন সাইফুর নাক ফাটিয়ে দেয়।’’ দু’পক্ষই নিজেদের আসল তৃণমূল দাবি করে সংঘর্ষের জন্য একে অন্যের উপর দায় চাপিয়েছে। তবে পুলিশ সময়মতো পদক্ষেপ করায় গোলমাল দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে।
রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি ইউসুফ শেখ অবশ্য বলেন, “এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। সহায়তা ক্যাম্প নিয়ে আমি ও মন্ত্রী (আখরুজ্জামান) ব্যস্ত রয়েছি। ওঁদের নিয়ে দ্রুত আলোচনায় বসব।” এদিন রাতে জঙ্গিপুরের এসডিপিও বলেন, ‘‘পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দু’পক্ষই দু’টি অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এফআইআর করেছে। এ পর্যন্ত ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে।’’ এলাকার তৃণমূল বিধায়ক তথা বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান বলেন, ‘‘ওই গ্রামে সকলেই তৃণমূল সমর্থক। গোলমাল রাজনৈতিক নয়। ব্যক্তিগত বিবাদ। পুলিশ যা পদক্ষেপ করার করছে। দল হস্তক্ষেপ করবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy