ছবি তোলা থেকে দামি রেস্তরাঁয় ক্যান্ডেল লাইট ডিনার, দামি উপহার থেকে নামী হোটেলে নিশিযাপন— প্রেমিকার সব শখ পূরণ করেছেন এই প্রেমিক। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রেমিকার শখ ছিল ঝকঝকে ছবির। যেমনটা পেশাদার ফটোশুটে দেখা যায় আর কি। কিন্তু তার জন্য যে চাই দামি ডিএসএলআর ক্যামেরা। প্রেমিককে সে কথা বলতেই কয়েক দিনের মধ্যেই হাজির ক্যামেরা। ছবি তোলা থেকে দামি রেস্তরাঁয় ক্যান্ডেল লাইট ডিনার, দামি উপহার থেকে নামী হোটেলে নিশিযাপন— প্রেমিকার সব শখ পূরণ করেছেন এই প্রেমিক। তবে চুরি করে। স্নাতক পাশ ওই চোরের কীর্তিতে তাজ্জব পুলিশ। যতই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন, ততই অবাক হচ্ছেন তদন্তকারীরা।
দিন কয়েক আগে নদিয়ার ধুবুলিয়ায় একটি চুরির ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে জানা যায় চোরের পরিচয়। তাঁর নাম অভিজিৎ সরকার। বাড়ি ধুবুলিয়াতেই। অভিজিৎকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই প্রকাশ্যে আসছে অবাক করা সব তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, দামি ক্যামেরা থেকে সামান্য থালা— সব জিনিসই এই চোরের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ইতিমধ্যে তাঁর কাছ থেকে ক্যামেরা, লেন্স-সহ অন্যান্য চুরি করা সামগ্রী উদ্ধার করেছে পুলিশ। কিন্তু কেন এই কাজ? চোর নাকি স্বীকার করেছেন, পুরোটাই ভালবাসার জন্য। প্রেমিকাকে খুশি করতেই চুরিবিদ্যায় হাত পাকিয়েছেন।
ধুবুলিয়ায় একের পর এক চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে একটি যোগসূত্র পেয়েছিল পুলিশ। চুরির নিত্যনতুন ধরন পুলিশকে অবাক করেছিল। কিন্তু তদন্তকারীরা নিশ্চিত হন, এই কাজ কোনও দাগি দুষ্কৃতীর হতে পারে না। কারণ, এই চোরের ঝোঁক সস্তা থেকে দামি সব জিনিসে। আর যে দোকানগুলোতে সিসিটিভি নেই, সেখানেই চুরি করেছেন এই চোর। এই সব চুরির তদন্তে নেমে পুলিশের সন্দেহ হয় অভিজিতের উপর। তদন্তকারীর জানাচ্ছেন, ওই এলাকার বেশ কয়েক জন যুবকের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন এবং বিলাসবহুল জীবনযাপন তাদের সন্দেহ বাড়িয়েছিল। তাই বেশ কয়েক জনকে তাঁরা চিহ্নিত করেন। কয়েক সপ্তাহ ধরে ওই যুবকদের উপরে নজরদারি চালায় পুলিশ। শেষে রবিবার অভিজিৎকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগরের একটি প্রথম সারির কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেছেন অভিজিৎ। বেশ সচ্ছল পরিবার। শুধুমাত্র প্রেমিকার বিলাসবহুল জীবনের চাহিদা মেটাতেই অপরাধমূলক কাজ করছেন এই যুবক।
কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কৃষাণু রায় বলেন, ‘‘তদন্তের ভিত্তিতে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তে এগোচ্ছে পুলিশ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy